সত্যায়িত/ সত্যায়ন মানে কি?

৬৮ হাজার অনলাইন গ্রাম: বাংলাদেশের গ্রাম

সত্যায়িত/ সত্যায়ন

সত্যায়িত/ সত্যায়ন

 সত্যায়িত/সত্যায়ন’ শব্দের অর্থ হচ্ছে, সত্যতা নিশ্চিতকরণ, ইংরেজি পরিভাষায় তাকে Attested’ বলা হয়। শব্দটির বাংলা শব্দ হিসেবে সত্যায়ন বা সত্যায়িত বলে থাকে। কিন্তু ‘Attest’-এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে সাক্ষ্য দেয়া, নিশ্চিতরূপে বলা, প্রমাণ করা, প্রকাশ করা। সত্যায়ন বা সত্যায়িত শব্দ দুটি মূল ধাতু সত্য থেকে এসেছে বলে মনে হলেও অভিধানে দেখা যায়, সত্য থেকে- সত্যনিষ্ঠ, সত্যানুরাগী, সত্যবাদী, সত্যপরায়ণ, সত্যবান, সত্যানুসন্ধানী,শব্দগুলো এসেছে ।সমাজে সত্যায়ন শব্দটির ব্যবহার রয়েছে অনেক। সত্যায়িত মানে হচ্ছে কোন প্রমাণ বা দলিল সঠিক বা সত্য বলে কোন সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক লিখিতভাবে সাক্ষর, সমর্থন বা নিশ্চিত করাকে ঘোষণা দেওয়াকেই বলা হয়।

কেন সত্যায়িত করতে হয়?

চাকরি বা যে কোনো আবেদনপত্রে সত্যায়িত চাওয়া হয় কারণ আবেদনপত্রে আপনার দাখিলকৃত ডকুমেন্ট সত্যি কিনা অথবা আসল ডকুমেন্টের কাগজ পত্র  কিনা সেটা দেখে একজন সরকারি উর্ধতন কর্মকর্তা সাইন করে সাক্ষ্য দেবেন। স্বাক্ষী এমন ব্যক্তি হবেন যার সাক্ষ্য বিশ্বাস করার যুক্তিযুক্ত কারণ আছে বা বিশ্বাষ যোগ্য। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা এদের মধ্যে অষ্টম গ্রেড থেকে তদুর্ধ্ব, বিশেষ ক্ষেত্রে উপজেলার মেয়র বা স্থানীয় সরকারের চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান, সরকারি অধ্যক্ষ, গণমাধ্যমের সম্পাদকসহ কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তিকে সত্যায়নের এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে।

কারা সত্যায়িত করে / কোথায় সত্যায়িত করবেন?

সত্যায়িত কাজের জন্য বিবেচিত বা দায়িত্ব প্রাপ্তরা হচ্ছেন প্রথম শ্রেণীর সরকারি কর্মকর্তাগণ।এক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ সত্যায়িত করতে পারেন না।

বিশেষ করে সত্যায়িত করেন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ বা জেলা পরিষদ কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিনিধিগণ।

এছাড়াও সরকারি কলেজ ও স্কুলের শিক্ষকগণ সত্যায়িত করতে পারেন।

কিন্তু বর্তমানে দেখা যায় প্রথম শ্রেণীর ক্যাডার, নন ক্যাডার, জনপ্রতিনিধি, নোটারী পাবলিক, পোষ্ট মাষ্টার তাহারাও সত্যায়িত করতে পারেন।

একাডেমিক ডুকুমেন্টস সত্যায়িত / অন্যান্য ডুকুমেন্টস সত্যায়িত কিভাবে করবেন।

How to attast academic ducoments and other ducoments.

আজকে বলব কিভাবে আপনার দাখিল আলিম বা SSC এবং HSC সার্টিফিকেট ও মার্কশীট সত্যায়ন করাবেন। প্রথমেই বলে রাখি পূর্বে শুধুমাত্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়ন করলেই হতো কিন্তু এখন এম্বাসি থেকেও করে নিতে হয়। এটি সৌদি আরব সহ প্রায় সব দেশের জন্যই বাধ্যতামূলক।

সত্যায়িত করার ধাপসমূহ;

  • আপনার শিক্ষা বোর্ড – যেই বোর্ড থেকে পরীক্ষা দিয়েছেন (ঢাকা, যশোর, মাদ্রাসা ইত্যাদি)
  • শিক্ষা মন্ত্রণালয়
  • পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
  • এম্বাসি (যেই দেশে পড়তে চান সেই দেশের কাগজপত্র)

প্রথম ধাপঃ শিক্ষা বোর্ড

প্রথমেই বলার চেষ্টা করব শিক্ষা বোর্ড থেকে কিভাবে সত্যায়িত করাবেন। মাদ্রাসা বোর্ড এর কথা যদি বলি তাহলে , মাদ্রাসা বোর্ড থেকে সত্যায়িত করার জন্য আপনাকে প্রথমে বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ঢাকা বকশিবাজার মাদ্রাসা বোর্ডে গিয়ে সত্যায়িত করার ফরম তুলতে হবে। ফরম আপনি বোর্ডের আসে পাশে ফটোকপি বা কম্পিউটারের দোকান থেকেও পেয়ে যাবেন। অথবা আপনি চাইলে এইখান থেকেও ডাউনলোড অপশনে গিয়ে ডাউনলোড করে নিতে পারেন। 

মাদ্রাসা বোর্ড ফরম লিংকঃ Download Form  (ডাউনলোড এ ক্লিক করে সরাসরি ফরম ডাউনলোড করুন

এবার আপনি ফরম প্রিন্ট করে পুরন করে ফেললেন। ফরম পুরন করে আপনার সাথে বোর্ডে যা যা নিয়ে যাবেন।

  • আলিম ও দাখিল এর সার্টিফিকেট ও মার্কশিট এর অরিজিনাল কপি (অরিজিনাল কপি না নিলে আপনাকে সত্যায়িত করে দিবেনা)
  • প্রতিটি অরিজিনাল কাগজের ৩ সেট  ফটোকপি করে নিবেন।
  • আরবি অনুবাদ (আরবি অনুবাদ না করালে সৌদি এম্বাসি আপনার কাগজ সত্যায়িত করবেনা। সৌদি এম্বাসি শুধুমাত্র অনুবাদে সত্যায়িত করে) – আরবি অনুবাদ গুলো আগে থেকে অবশ্যই ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর কাছ থেকে সত্যায়িত করে নিবেন। তারপর অনুবাদ এর সাথে অরিজিনাল কপির সমস্ত কিছু মিল আছে কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নিবেন তা না হলে ভুল থাকলে বোর্ড সেটি সত্যায়িত করবেনা।
  • ছবি (বোর্ডর ফরমের সাথে ছবি যুক্ত করে দিবেন)

ইসলামিক ফাউন্ডেশন লোকেশনঃ আপনারা বাইতুল মুকাররাম এ গিয়ে সেখানে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে সত্যায়িত করতে পারবেন অথবা এর আগারগাঁও শাখা থেকেও সত্যায়িত করাতে পারবেন। অবশ্যই ফি নিয়ে যাবেন। প্রতি কাগজ ৫০-১০০ টাকা হতে পারে। বাইতুল মুকাররমে সত্যায়ন না করলে আপনারা অনুবাদ সেন্টারের হেল্প নিবেন। এতে অনুবাদ সেন্টার গুলো সত্যায়িত করতে সহযোগিতা করবে। অথবা আগারগাঁও গিয়ে সেখান থেকে করিয়ে নিতে পারবেন।

এ পর্যন্ত যদি আপনি গুছিয়ে করতে পারেন তাহলে আপনার কাজ প্রায় শেষের পথে। এরপর আপনি চলে যাবেন মাদ্রাসা বোর্ড এর সোনালি ব্যাংকে সেখানে গিয়ে আপনি যে কয়েকটা কাগজ সত্যায়িত করাবেন তার জন্য একটা স্লিপ নিবেন (স্লিপ নিয়ে সেখানে একজন লোক টেবিলে বসা থাকে, ওনাকে দিয়ে চাইলে পুরন করাতে পারেন অথবা চাইলে আপনিও করতে পারেন।) যেই শ্রেনির কাগজ সত্যায়িত করবেন তার সার্টিফিকেট ও মার্কশিট বাবদ ১৫০+১৫০=৩০০ টাকা করে পেমেন্ট করবেন। যদি দাখিল আর আলিম দুইটাই করেন তবে দাখিলে সার্টিফিকেট ও মার্কশিট বাবদ ১৫০+১৫০=৩০০ এবং আলিমের সার্টিফিকেট ও মার্কশিট বাবদ ১৫০+১৫০=৩০০। মোট দাখিল আর আলিম মিলে ৬০০ টাকা পেমেন্ট করে আপনি সোনালি ব্যাংক থেকে দুইটি রিসিট পেপার নিয়ে নিবেন।

→ দাখিল ও আলিম (Certificate and Marksheet) = ৬০০ টাকা মোট

এরপর আপনি আপনার প্রতিটা কাগজ এর অরিজিনাল কপি + ৩ সেট ফটোকপি + অনুবাদ সহ নিয়ে যাবেন নিচতলায় কাউন্টারে। সেখানে গিয়ে আপনার সাথে যা যা অবশ্যই রাখবেন,

  • বোর্ড থেকে দেয়া পূরনকৃত ফরম
  • আপনার দাখিল ও আলিম এর সার্টিফিকেট ও মার্কশিট + এগুলোর ফটোকপি ও আরবি অনুবাদ (চাইলে আপনি আরবি অনুবাদ এর ৩ সেট করে ফটোকপি দিতে পারেন।)
  • আপনার টাকা জমা দেয়ার রশিদ
  • ছবি (বোর্ডের ফরমের সাথে ছবি যুক্ত করে নিবেন)

এগুলো নিয়ে কাউন্টারে জমা দিয়ে কাউন্টার থেকে দুইটা রিসিট নিবেন। যদি এক ধরনের কাগজ সত্যায়ন করেন তবে একটি দিবে আর দুইটি করালে দুইটি দিবে। অর্থ্যাৎ দাখিল আর আলিমের সার্টিফিকেট মার্কশিট সত্যায়ন করালে দুইটা রিসিট পাবেন আর একটা করালে একটা দিবে। এই রিসিট  কোন ভাবে হারানো যাবেনা অবশ্যই সাথে রাখতে হবে। জমা দেয়ার তিন দিন পর বোর্ডে গিয়ে এই রিসিট দিলেই আপনাকে আপনার সার্টিফিকেট, মার্কশীট  সত্যায়িত করে ফেরত দিয়ে দিবে। বোর্ড ত্যগ করার পূর্বে অবশ্যই পনরায় দেখে নিবেন। 

নোটঃ অবশ্যই নিজে যাবেন , অন্যকাউকে পাঠালে আপনার কাগজ তাকে কখনো দিবেনা।


দ্বিতিয় ধাপঃ শিক্ষা মন্ত্রণালয়

লোকেশনঃ আপনি পুরানা পল্টোন নেমে পশ্চিম দিকে কিছুক্ষন হেটে প্রেস ক্লাবের পেছনে হাতের বাম দিকে ছোট একটি অগ্রনী ব্যাংক এর সাইনবোর্ড সহ একটি গলি পাবেন। সেখানে গিয়ে কাউকে পরিবহন পুল ভবন কোথায় তা জিজ্ঞাস করবেন। পরিবহন পুল ভবনে যাওয়ার পর সাত তলা লিফটে উঠে এরপর আপনাকে হেঁটে সরাসরি চলে যেতে হবে ১৩ তলায়।

সেখানে গিয়ে আপনার বোর্ড থেকে সত্যায়িত হওয়া সার্টিফিকেট ও মার্কশিট আর এর ফটোকপি ও সত্যায়িত অনুবাদ সহ সমস্ত কিছু জমা দিবেন। সেখানকার দায়িত্বরত কর্মকর্তা আপনার কাগজ দেখে সেগুলোতে সত্যায়িত করে দিবেন। তবে এখানে একটি ব্যাপার মনে রাখবেন। অবশ্যই সমস্ত কাগজ সত্যায়িত হয়েছে কিনা চেক করে নিবেন।

নোটঃ অবশ্যই  আপনার প্রতিটি সত্যায়িত মেইন কপির একটি করে অতিরিক্ত ফটোকপি নিয়ে যাবেন। এই অতিরিক্ত ফটোকপি শিক্ষা মন্ত্রণালয় জমা রেখে দিবে ভবিষ্যতে যাচাই-বাচাই এর জন্য। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সত্যায়িত করতে কোন টাকা লাগবেনা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করে দিবে।


তৃতীয় ধাপঃ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

লোকেশনঃ আপনি পুরানা পল্টোন নেমে পশ্চিম দিকে হেটে গিয়ে প্রেস ক্লাব এর থেকে হেটে সামনে গেলেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর সত্যায়িত যেখানে করে সেই ছোট গেট দেখতে পারবেন। এটিকে কাউন্সিলর সেবা বলে।  না চিনলে কাউকে জিজ্ঞাস করবেন যে কাউন্সিলর সেবা কোথায় যে কেউ দেখায় দিবে। হাতের ডানে ছোট গেইট দিয়ে আপনি প্রবেশ করে সোজা হেটে যাবেন সেখানে বসার  ব্যবস্থা আছে আর সেখানেই কাউন্সিলর সেবা বা সত্যায়িত করা হয়।

সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত কাগজ জমা নেয়া হয় তাই এই সময়ের মধ্যেই গিয়ে আপনার সমস্ত কাগজ সুন্দর করে গুছাবেন এরপর কতগুলো কাগজ গুনে সেখানকার দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে জানাবেন । তিনি কাগজ জমা নিয়ে আপনাকে একটা ছোট টিকেট দিবে যেটিতে একটি নাম্বার ও কতগুলো কাগজ সত্যায়িত হবে তার সংখ্যা লেখা থাকবে। এই কাগজ টা হারালে আপনি আপনার কাগজ ফেরত পাবেন না, তাই অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করবেন। কাগজ জমা দেয়ার পর বিকাল ৪ টার সময় আপনাকে আপনার কাগজের সিরিয়াল অনুযায়ি ডাকা হবে। অনেক সময় সাথে সাথেও দিয়ে দিতে পারে। কাগজ নেয়ার পর অবশ্যই সমস্ত কাগজ সত্যায়িত হয়েছে কিনা চেক করে নিবেন। 

নোটঃ অবশ্যই  আপনার প্রতিটি সত্যায়িত মেইন কপির একটি করে অতিরিক্ত ফটোকপি নিয়ে যাবেন। এই অতিরিক্ত ফটোকপি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জমা রেখে দিবে ভবিষ্যতে যাচাই-বাচাই এর জন্য। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সত্যায়িত করতে কোন টাকা লাগবেনা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করে দিবে।


প্রশ্নঃ কতদিন লাগবে পররাষ্ট মন্ত্রণালয় পর্যন্ত অন্যন্য যায়গায় সত্যায়িত করতে?

উত্তরঃ সর্বোচ্চ ৭ দিন। ৫ দিনেই যদিও কাজ করে ফেলতে পারবেন।


চতুর্থ ধাপঃ এম্বাসি

এই উপরোক্ত তিন ধাপের সমস্ত কাগজ সত্যায়নের কাজ শেষ করার পর আপনি আপনার এম্বাসি তে চলে যাবেন। এম্বাসি তে যাওয়ার আগে ট্রাভেল এজেন্সিদের কাছে যাবেন।  তাই এজেন্সিতে গিয়ে আগে সেখানে টাকা জমা দিয়ে অনলাইনে পেমেট করে আপনাকে রশিদ দিবে সেই রশিদ সহ অরিজিনাল কপি আর অনুবাদ নিয়ে সৌদি এম্বাসি অথবা আপনি যে দেশে স্কলারশিপ পেয়েছেন সেই এম্বাসিতে  চলে যাবেন এরপর এম্বাসিতে জমা দিলেই তারা সত্যায়ন করে দিবে।

আর সৌদির ভিসা স্ট্যাম্পিং এর জন্য  তাশরিহ (যমুনা ফিউচার পার্কের নিচ তলায়) চলে যাবেন। যাওয়ার আগে অবশ্যই তাদের অনলাইন ওয়েবসাইট থেকে এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে যেতে হবে। 

তাশরিহ এর ওয়েবসাইটঃ https://vc.tasheer.com/


প্রশ্নঃ কওমী মাদ্রাসা থেকে কিভাবে সত্যায়িত করাব?

উত্তরঃ প্রথমে আপনার মেইন কাগজ নোটারি করে নিবেন। এরপর বেফাক বোর্ড থেক সত্যায়ন করবেন। যদি আরবি হয় তবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে করবেন। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গিয়ে করাবেন।

ধাপসমূহঃ নোটারি>বেফাক বোর্ড>ইসলামিক ফাউন্ডেশন (কাগজ আরবি হলে)>শিক্ষা মন্ত্রণালয়>পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যাদের বোর্ড নেই তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয় আর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চলে যাবেন।

যারা সালাফিইয়া মাদ্রাসা থেকে পড়েছেন বেফাক বোর্ড এর বাইরে তারা এ ধাপ গুলো অনুসরন করবেন

সত্যায়িত করার ধাপসমূহঃ নোটারি>ইসলামিক ফাউন্ডেশন (কাগজ আরবি হলে)>শিক্ষা মন্ত্রণালয়>পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

নোটারি কোথা থেকে করবেন?

→আপনি পুরানা পল্টন গিয়ে সেখানে অনেক নোটারি করে এমন মানুষ পেয়ে যাবেন। নয়ত সেখানে যেকোন অনুবাদ সেন্টারে গিয়ে তাদেরকে বললেই করে দিবে।

সার্টিফিকেট সত্যায়িত করনের ধাপ

আপনি ব্যাচেলর/মাস্টার্স এর সনদপত্র ও নম্বরপত্র আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার থেকে সত্যায়ন করবেন। উল্লেখ্যঃ কোন কোন বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সেটা সহকারি রেজিস্ট্রার/কন্ট্রোলার/সহকারি কন্ট্রোলার দিয়ে করালেও গ্রহণ করে। তাই, অবশ্যই আগে আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ও এডমিশন অফিসে মেইল করে জেনে নিবেন।

এডুকেশন বোর্ড থেকে সত্যায়ন

প্রথমেই আসি এডুকেশন বোর্ড থেকে সার্টিফিকেট সত্যায়ন। বোর্ড শুধু আপনার SSC এবং HSC এর সার্টিফিকেট সত্যায়ন করে দিবে। সার্টিফিকেট ও মার্কশীট শিক্ষা বোর্ড থেকে সত্যায়িত করাতে কমপক্ষে ৩-৫ দিন সময় লাগবে। এই সময়ে মেইন কপি সহ ৪ সেট ফটোকপি সাথে রাখবেন। এখানে ফি বাবদ ৫০০-৬০০ টাকা খরচ হতে পারে। ফি বাবদ টাকা ব্যাংক ড্রাফট করবেন শিক্ষা বোর্ডের সোনালী ব্যাংক থেকে। তারপর বোর্ড থেকে একটি ফর্ম পূরণ করে টাকা জমার রিসিট সহ আপনার সকল ডকুমেন্টস জমা দিবেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়ন

এরপর আসি কিভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ডকুমেন্টস সত্যায়ন করাবেন।

প্রথমে নিজ নিজ ইউনির্ভারসিটি থেকে সার্টিফিকেট এবং ট্রান্সক্রিপ্ট এর কপি ভেরিফাই করে নিতে হবে। উল্লেখ্য যে, প্রাইভেট এবং সরকারী এর নিয়ম ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর ক্ষেত্রে এটা জানা জরুরী যে কোন কোন সিগ্নেটরির নাম এবং সিগ্নেচার Ministry of Education (MoEd) এ এনলিস্টেড। শুধুমাত্র এনলিস্টেড সিগ্নেটরি দিয়েই ভেরিফাই করাবেন, অন্যথায় MoEd এ ঝামেলা করে।

ঢাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ সচিবালয়ে যেতে হবে। সচিবালয়ের গেট নং ০২, কাউন্টার নং ১০ ( যদি পল্টন মোড় থেকে আসতে থাকেন, তাহলে জিরো পয়েন্ট মোড় থেকে ডানে যেতে হবে )। মেইন কপি সহ ৩/৪ ফটোকপি ডকুমেন্টস সাথে নিয়ে যাবেন। এখানে কাগজ-পত্র সকাল ১১ টা থেকে জমা পড়া শুরু হয় আর বিশেষ কোন সমস্যা না থাকলে ঐ দিনের  বেলায় ৩টা বা ৪টার মধ্যে ডকুমেন্টস ফেরত দেয়া শুরুকরে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়ন

কাগজপত্র আপনাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও জমা দিতে হতে পারে সত্যায়নের জন্য। পল্টন মোড় থেকে প্রেসক্লাব মোড় চলে গেলে, প্রেসক্লাবের ঠিক বিপরীতে রাস্তার সাথেই পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়। অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র / পাসর্পোট এর ফটোকপি নিয়ে যাবেন।

তবে মনে রাখবেন, অনেক শিক্ষার্থী এই কাজের জন্য লাইনে দাঁড়ায়- তাই সকাল সকাল এসে লাইনে দাড়াতে হবে নয়ত অনেকটাই দেরি হতে পারে। ঐ দিনই দুপুর ৩.৩০ এর দিকে ফেরত দেয়া হয় সত্যায়িত কপি। বের হবার আগে অবশ্যই দেখে নিবেন সিল, সিরিয়াল নাম্বার ও সাক্ষর ঠিকমতো আছে কিনা।

এম্বেসী থেকে ডকুমেন্টস সত্যায়নের

এম্বেসী থেকে ডকুমেন্টস সত্যায়নের জন্য অবশ্যই আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সেই ডকুমেন্টস সত্যায়ন করিয়ে আনতে হবে। এরপর এম্বেসীতে জমা দিতে হবে- নোটারাইজড করে অনেক সময় জমা দিতে হতে পারে- কিন্তু সেটা নির্ভর করছে কর্তৃপক্ষের উপর। আর এই সময় ডকুমেন্টস এর মেইন কপি নিয়ে যেতে ভুলবেন না।

বাইরের দেশের এম্বেসী থেকে সত্যায়ন করতে আপনার সেই দেশে অবস্থিত বন্ধু বা আত্মীয়দের সাহায্য নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। সেক্ষেত্রে সাধারণত ফি জমা দিতে হয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও দেশের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে আপনি সহজেই কাজ করতে পারবেন।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সত্যায়ন

আপনি আপনার নিজ থানা থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এর আবেদন করবেন। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সাধারণত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়িত হয়েই আসে। তারপরও যদি আপনার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক সত্যায়িত না থাকে তবে তা করে নিতে হবে।উল্লেখ্য যে, বর্তমানে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এর জন্য অনলাইনেই আবেদন করা যায় এবং বাসায় বসেই সার্টিফিকেট পাওয়া যায়।

জন্ম নিবন্ধন/ বার্থ সার্টিফিকেট সত্যায়ন

আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন পত্র টি প্রথমেই ইংরেজিতে অনুবাদ করে নিবেন ( যদি করা না থাকে )। তারপর সেটা নোটারি পাব্লিক করে আইন মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়ন করে নিবেন।

নোটারি পাব্লিক

নোটারি করতে চাইলে একজন আইনজীবী লাগবে যিনি নোটারি করানোর যোগ্যতা রাখেন। এরপর তিনি প্রথমে আপনার মূল বা আসল সনদপত্র যাচাই করে দেখবেন। মূল সনদপত্র বলতে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, ট্রান্সক্রিপ্ট, জন্ম সনদ, চারিত্রিক সনদ ইত্যাদি বোঝায়।