সহজেই জন্ম নিবন্ধন আবেদন A to Z গাইডলাইন

jonmo nibondon

জন্মনিবন্ধন একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনগত প্রক্রিয়া, যা একজন ব্যক্তির পরিচয় এবং নাগরিকতা বহন করে। এটি আপনার জন্মের একটি নিবন্ধনকৃত রেকর্ড, যা বিভিন্ন আইনী, শিক্ষাগত এবং প্রশাসনিক বিভিন্ন সহায়তা পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। তবে, জন্মনিবন্ধনের প্রক্রিয়াটি বেশ কঠিন হতে পারে অনেকের জন্য। কিন্তু , আমরা আপনাকে এই প্রক্রিয়াটি সহজ এবং সাবলীল ভাষায় ব্যাখ্যা করেছি সম্পূর্ণ A থেকে Z গাইডলাইন এর মাধ্যমে যাতে আপনি সহজেই আমাদের সাথে সাথে আপনার নিবন্ধন আবেদনটি করে ফেলতে পারেন।

কেন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করা এতোটা জরুরী?

জন্ম নিবন্ধন ছাড়া নাগরিকত্ব প্রমান করা যায়না একই সাথে সরকারি সেবা ও সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়না। শিশুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ভর্তি, উপবৃত্তি প্রাপ্তি সহ আরো অনেক কাজে জন্ম নিবন্ধনের প্রয়োজন। অনেকে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে ঝামেলাবোধ করেন। এজন্য আবেদন করেননা। গুরুত্বপূর্ন বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি না করে জেনে নিন আর কাজ শুরু করুন ঘরে বসেই।

২০০৬ সাল থেকে বাংলাদেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন কার্যকর করা হয়। বর্তমানে বিভিন্ন জায়গাতেই জন্ম নিবন্ধন সনদের ব্যবহার অত্যাবর্শকীয় হয়ে গিয়েছে। যেমনঃ

আমরা যখন আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন করতে যাই তখন আমদের জন্ম সনদের প্রয়োজন হয়।

অনেক সময় আমদের বয়স ১৮ হওয়ার আগেই আমদের পাসপোর্ট প্রয়োজন হয় সেই ক্ষেত্রে জন্ম সনদ ছাড়া আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে।

আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি থেকে শুরু করে, বিভিন্ন পরিক্ষা যেমন জে, এস, সি পি এস, সি রেজিস্ট্রেশন করতে এই সনদের দরকার হয়।

বিবাহ নিবন্ধন করার সময় জন্মনিবন্ধন এর দরকার ইয় যাতে পাত্র-পাত্রীর আসল বয়স জানা যায় এবং এতে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।

অনেক সময় আমাদের ১৮ বছর হওয়ার সাথে সাথেই দেশের বাহিরে যাওয়ার জন্যে অথবা নিজ প্রয়োজনে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রয়োজন হয়, কিন্তু অনেকের তখন জাতীয় পরিচয়পত্র থাকে না, কিন্তু তখন আমাদের জন্মনিবন্ধন ব্যবহার করে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্যে আবেদন করে থাকি।

তাই দেরি না করে আমাদের গাইডলাইন অনুসরন করে সহজেই আপনার জন্মনিবন্ধন কাজটি সম্পূর্ণ করে নিন।

জন্ম সনদ কখন এবং কোথায় করবেন?

নতুন আইন অনুযায়ী বর্তমানে কোন নবজাতক শিশু জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। তবে অনেক সময় এই সময়ের মধ্যে সম্ভব হয় না তখন ২ বছরের মধ্যে নিবন্ধন করতে পারে কিন্তু যদি জন্ম নিবন্ধন করতে ২ বছরের বেশী দেরি হলে শিশুর পিতামাতাকে জরিমানা গুনতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এটিকেই মূলত নাগরিক সনদ হিসেবে কাজ করে।

এছাড়াও যদি পূর্ণবয়স্ক কারো নিবন্ধন করতে হয়, তখন প্রয়োজনীয় অনেক তথ্যাদি সংযুক্ত করতে হয় এটি করা অনেকটা কষ্টসাধ্য।

বর্তমান সময়ে জন্মনিবন্ধন অনলাইন পদ্ধতিতে করতে হয়। তার জন্যে আপনাকে নির্ধারিত ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করে সঠিক তথ্য দিয়ে কার্য সম্পাদন করতে হবে এবং যদি তথ্যে কোনো ভুল হয় তখন জন্মনিন্ধন সংশোধন এর জন্যে পুনরায় আবেদন করতে হবে।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দিয়ে ঘরে বসেই আবেদন করতে পারেন। অথবা ইউনিয়ন পরিষদ অথবা পৌরসভা থেকে সরাসরি জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারেন।

জন্ম নিবন্ধন আবেদন এর পূর্ব প্রস্তুতিঃ

বর্তমানে সরকার জন্মনিবন্ধন সেবা টি কে ই-সেবার আওতায় নিয়ে এসেছে। তাই নতুন বা পুরনো সবাইকে এখন জন্মনিবন্ধন অনলাইন ভিত্তিক করতে হবে। অনেকে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে ঝামেলাবোধ করেন। এজন্য আবেদন করেননা। গুরুত্বপূর্ন বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি না করে জেনে নিন আর কাজ শুরু করুন ঘরে বসেই।

 বয়সের ভিত্তিতে জন্ম সনদের জন্য আলাদা আলাদা ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয়, চলুন জেনে নেই ২০২৪ সালে জন্মনিবন্ধন করতে কাদের জন্য কি কি ডকুমেন্টস লাগবে।

নবজাতক শিশুর জন্ম নিবন্ধন আবেদনের ক্ষেত্রেঃ

শিশুর বয়স যদি ৪৫ দিন বা এর কম হয় তাহলে আমাদের প্রথমেই সংগ্রহ করতে হবে

যে ক্লিনিকে বা হাসপাতালে জন্ম গ্রহণ করেছে তার ছাড়পত্র।

যদি কোন হাসপাতালে জন্ম গ্রহণ না করে থাকে তাহলে তথ্য সংগ্রহকারী হিসেবে নিবন্ধক কর্তৃক নির্দিষ্ট কোন এনজিও কর্মীর প্রত্যয়ন পত্র।

হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ

পিতা-মাতার জন্মনিবন্ধন এর অনলাইন কপি বা জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি

অভিভাবকের মোবাইল নম্বর

শিশুর বয়স যদি ৪৬ দিন এর বেশি হয়ঃ

টিকা কার্ড এর মুলকপি দিতে হবে

পিতা-মাতার NID কার্ডের কপি (যদি থাকে)

পিতা-মাতার Online Birth Certificate এর কপি (যদি থাকে)

স্কুল শিক্ষার্থী হলে প্রতিষ্ঠান প্রদানের সত্যায়িত প্রত্যয়ন পত্র

ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ

আবেদনকারীর অভিভাবকের মোবাইল নম্বর

বয়স যদি ৫ বছরের উর্ধে হয়ঃ

বয়সের প্রমাণপত্র হিসেবে সরকারি এমবিবিএস ডাক্তার কর্তৃক সত্যায়িত প্রত্যয়ন পত্র লাগবে

সরকারিভাবে বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত PSC, JSC কিংবা SSC – এর সার্টিফিকেট (যদি থাকে)

পিতা-মাতার NID বা Birth Certificate এর কপি

জন্মস্থান ও স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণপত্র হিসেবে হোল্ডিং ট্যাক্স এর কপি

জন্ম নিবন্ধনের জন্য সঠিকভাবে পূরণকৃত আবেদন ফরমটির প্রিন্ট কপি।

উপরোক্ত কাগজপত্র গুলো যদি পাওয়া না যায় তাহলে  বয়স ও জন্মস্থান প্রমাণের জন্য তথ্য সংগ্রহকারী হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক বা তাদের দ্বারা মনোনীত কোনো শিক্ষক বা কর্মকর্তা হতে প্রত্যয়ন। অথবা বয়স ও জন্মস্থান প্রমাণের জন্য ইপিআই কার্ড বা পাসপোর্ট বা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা কোন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের জন্ম সংক্রান্ত ছাড়পত্র বা উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত জন্ম সংক্রান্ত সনদের সত্যায়িত অনলিপি অথবা নিবন্ধকের জন্ম তারিখ বা তার ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে জন্ম সংক্রান্ত কোন দলিল। অথবা তথ্য সংগ্রহকারী হিসেবে নিবন্ধন কর্তৃক নির্দিষ্ট করা কোন এনজিও কর্মীর প্রত্যয়ন।

চলুন এখন আমরা প্র্যাক্টিক্যালি  আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করিঃ

জন্ম নিবন্ধন করার জন্য প্রথমে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ওয়েবসাইটে আসতে হবে। জন্ম নিবন্ধনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট লিংক হলো: https://bdris.gov.bd/br/application এই সাইটটিতে প্রবেশ করুন।

এখন স্টেপ বাই স্টেপ অনুসরন করুন আমাকে –

স্টেপ ১ঃ জন্ম নিবন্ধনের জন্যে আবেদন ফরমঃ

জন্ম নিবন্ধনের জন্য উক্ত সাইটটিতে ক্লিক করে আপনিও আমার মতো এমন একটি পেইজ দেখতে পাবেন । এখান থেকে আপনাকে আপনার ঠিকানা নির্ধারন করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করতে হবে।

jonmo nibondon abedon

এখন আপনি আপনার পছন্দমত জন্মস্থান অথবা স্থায়ী ঠিকানা যেকোনো একটি অপশন সিলেক্ট করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

স্টেপ ২ঃ নিবন্ধনের জন্যে নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির পরিচিতি

জন্ম নিবন্ধন আবেদন

এখন আমরা জন্ম নিবন্ধন এর জন্য আবেদন ফরমটি দেখতে পাচ্ছি। ফরমটি পুরন করার ক্ষেত্রে আমাদের মনে রাখতে হবে ফরমটির যে যে অংশে রেড স্টারমার্ক দেওয়া আছে সে অংশগুলো আমাদের সম্পূর্ণভাবে পূরন করতে হবে। অন্যথায় ফর্মটি গ্রহণযোগ্য হবে না। আসুন এবার ফর্মটি পূরণ করি।

প্রথম যে অংশটি আমরা দেখতে পাচ্ছি সেটা হচ্ছে নামের প্রথম অংশ বাংলায় এবং নামের শেষ অংশ বাংলায়, আপনার নামটিতে যদি দুইটি শব্দ থাকে তাহলে তার প্রথম শব্দটি নামের প্রথম অংশ হিসেবে এবং নামের দ্বিতীয় অংশটি শেষ অংশ হিসেবে বসবে।

যেমন– আপনার নাম যদি হয় আলাউদ্দিন মিয়া সে ক্ষেত্রে আলাউদ্দিন বসবে প্রথম অংশে মিয়া বসবে শেষ অংশে। যদি হয় মোঃ আলাউদ্দিন মিয়া সে ক্ষেত্রে মোঃ আলাউদ্দিন বসবে প্রথম অংশে মিয়া বসবে শেষ অংশে।

 একইভাবে ইংরেজিতেও পূরণ করতে হবে। তারপর সঠিকভাবে আপনার জন্ম তারিখটি লিখুন। আপনি আপনার পিতা-মাতার কততম সন্তান সে সংখ্যাটা লিখুন।

 ধরুন, আপনার পিতা-মাতা চারটি সন্তান দুটি ভাই দুটি বোন এবং আপনি সবার ছোট সেক্ষেত্রে আপনার সংখ্যাটা হবে চার। এবার আপনার লিঙ্গ নির্বাচন করে জন্মস্থানের ঠিকানা সঠিকভাবে বসান।

জন্ম সনদ আবেদন

নোট – আপনি যখন বয়স নির্বাচন করবেন ঠিক তখন আপনার সামনেও এরকম একটি নোটিশ চলে আসবে যেটার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন আপনার কি কি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবে।

স্টেপ ৩ঃ পিতা-মাতার জন্মনিবন্ধন এর তথ্যাদিঃ

পিতা মাতার জন্মনিবন্ধন তথ্য

এখানে সঠিকভাবে আপনার পিতা-মাতার সকল তথ্য লিপিবদ্ধ করতে হবে। প্রথমে আপনাকে আপনার পিতা-মাতার ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন নম্বরটি বসাতে হবে। পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিকভাবে বসান, সঠিক তারিখটি বসাতে হবে। যদি পিতা মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র থাকে তাহলে সেটি আপনি এখানে দিতে পারেন যদিও এটা দেওয়া বাধ্যতামূলক না যেহেতু এখানে স্টার মার্ক করা নেই।

স্টেপ ৪ঃ কিভাবে জন্ম নিবন্ধনের জন্যে ঠিকানা নির্বাচন করবেন?

এখন আপনাকে ঠিকানা নির্ধারণ করতে হবে। আপনার জন্মস্থানের ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা যদি একই হয় তাহলে প্রথম অপশনটিতে ক্লিক করবেন। আর যদি স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা একই হয় তাহলে দ্বিতীয় অপশনটিতে ক্লিক করবেন। আপনি আপনার সঠিক তথ্য অনুযায়ী সঠিক অপশনটিতে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি দিয়ে পরবর্তি বাটনে ক্লিক করুন।

স্টেপ ৫ঃ যার জন্য আবেদন করছেন, আপনি তার কি হন?

জন্ম নিবন্ধন আবেদন সম্পূর্ণ করুন

এখন আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে যার জন্য আবেদনটি করা হচ্ছে তার সাথে আপনার সম্পর্কটা কি? যদি আপনি আপনার সন্তানের জন্য আবেদন করে থাকেন তাহলে আপনি পিতা অথবা মাতা অথবা যদি আপনি আপনার নিজের জন্যে আবেদন করে থাকেন তাহলে নিজ অপশনটি বাছাই করুন। পরিশেষে সংযোজনে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যগুলোইমেজ jpg, jpeg or png ফাইল আকারে আপলোড করুন।

ঠিক এই ভাবে ঘরে বসে অনেক সহজেই অনলাইনে নিজের জন্মনিবন্ধন নিজেই করে ফেলুন নির্ভুল ভাবে ।

জন্ম নিবন্ধন আবেদন রিভিউ এবং ফাইনাল সাবমিট-

সকল তথ্য আপলোড করার পর আপনি আপনার আবেদনটি রিভিউ করার সুযোগ পাবেন সে ক্ষেত্রে আপনি পুনরায় প্রথম থেকে আপনার সঠিক তথ্যগুলো ঠিক আছে কিনা যাচাই করে তারপর আপনি ফাইনাল সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। একবার ফাইনাল সাবমিট বাটনে ক্লিক করার পর পুনরায় সংশোধন করার সুযোগ পাবেন না।

জন্মনিবন্ধন আবেদনটি কিভাবে ডাউনলোড বা প্রিন্ট করবেন?

আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন সঠিক হলে আইডিসহ আবেদনপত্র প্রিন্ট করার অপশন আসবে।

স্টেপ ৬ঃ আপনার আবেদনটি সফল করুন

আবেদনটি পূর্ন হয়েছে

 এই পর্যায়ে এসে বুঝতে পারবেন আপনার আবেদন টি সফল হয়েছে কিনা এখান থেকে খুব সহজে প্রিন্ট লেখা অপশনে ক্লিক করে আপনার জন্মনিবন্ধন আবেদন প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। প্রিন্ট করার জন্য প্রিন্টার না থাকলে সেভ করে নিয়ে যেকোন আইটি সেবা প্রদানকারী সেন্টার থেকে প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। অথবা যদি প্রিন্ট করতে সমস্যাই ভুগেন তাহলে আপনি এই আবেদন পত্রের সিরিয়াল নাম্বারটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন অথবা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রিন্ট করিয়ে নিতে পারবেন।

মনে রাখতে হবে উল্লেখিত ছবিতে একটি তারিখ দেয়া আছে, আপনাকে সেই নির্ধারিত তারিখ এর মধ্যে সকল প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সহ আপনার আবেদনটি দাখিল করতে হবে।

কোথায় থেকে সংগ্রহ করবেন জন্ম নিবন্ধন ফরম?

২০২৪ সালে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করার জন্য সরকার যে ওয়েবসাইট চালু করেছে তার এই লিংকে প্রবেশ করলেই আপনি উক্ত ফরমটি পেয়ে যাবেন আতি সহজেই লিংক:  https://bdris.gov.bd/br/application । ফরমটিতে প্রবেশ করে সঠিক তথ্য দিয়ে পুরন করে তারপর নির্ধারিত ফরমটি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ এ জমা দিন।

জেনে নিন আপনার জন্ম সনদের বর্তমান অবস্থাঃ

আপনার আবেদনটি বর্তমানে কোন পর্যায়ে আছে তা জানতে ভিজিট করুন https://bdris.gov.bd/br/application/status এই লিংকে । এখানে প্রবেশ করে এবার প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে দেখে নিন আপনার আবেদনের বর্তমান অবস্থান।

কিভাবে বাতিল করবেন আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদনটি?

যদি আপনার মনে হয় আপনি জন্মনিবন্ধন আবেদন করতে গিয়ে কোনো ভুল করেছেন বা কোনো তথ্য ভুল দিয়েছেন তখন আপনি সেই আবেদনটি নির্ধারিত সমইয়ের মধ্যে বাতিল করার সুযোগ পাবেন সেই ক্ষেত্রে আপনাকে ১৫দিনের মধ্যে কেনো আবেদনটি বাতিল করতে চান তার উপযুক্ত কারন দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা কাউন্সিলরের কার্যালয় বরাবর আবেদন করলে বাতিল করা সম্ভব হবে। পরবর্তীতে আবার আবেদন করতে পারবেন।

জন্মনিবন্ধন আবেদন করতে কেমন খরচ হয়?

যদিও ২০১০ সাল পর্যন্ত এই আবেদন বিনামুল্যেই করা হতো কিন্তু বর্তমানে তা বয়সের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট কিছু ফি ধার্য করা হয়েছে –

দেশের ভিতরে আবেদনের ক্ষেত্রেঃ

শিশুর বয়স ৪৫ দিন এর মধ্যে হলে কোনো ফি দিতে হবে না

শিশুর বয়স ৪৫ দিন এর পর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত হ লে ২৫ টাকা ফি দিতে হবে

শিশুর বয়স যদি ৫ বছর এর বেশি হলে ৫০ টাকা ফি দিতে হবে

বিদেশে আবেদনের ক্ষেত্রেঃ

শিশুর বয়স ৪৫ দিন এর মধ্যে হলে কোনো ফি দিতে হবে না

শিশুর বয়স ৪৫ দিন এর পর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত হলে ১মার্কিন ডলার ফি দিতে হবে

শিশুর বয়স যদি ৫ বছর এর বেশি হলে ৫ মার্কিন ডলার ফি দিতে হবে।

জন্মনিবন্ধন আপনার আইনগত পরিচয় স্থাপন এবং আপনার জীবনে বিভিন্ন অধিকার এবং সেবা পাওয়ার পথের প্রথম পদক্ষেপ। আমার দেখানো A to Z গাইডলাইন অনুসরণ করে, আপনি সহজেই   জন্মনিবন্ধনের প্রক্রিয়াটি সহজভাবে সম্পাদন করতে পারেন এবং নির্ধারিত জন্ম সনদ নিতে সাফল্য লাভ করতে পারেন। জন্ম সনদের গুরুত্ব ও ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে- এটি শুধুমাত্র একটি কাগজের টুকরো নয় বরং এটি আপনার আইনগত পরিচয়ের চাবি।

জন্ম নিবন্ধন আবেদন সম্পর্কে আপনার যাবতীয় প্রশ্ন (FAQ’s)

  1. প্রশ্ন: জন্ম নিবন্ধন আবেদন করবো কিভাবে?

উত্তর: প্রয়োজনীয় যাবতীয় কাগজপত্র নিয়ে অনলাইনে নিচের লিংক থেকে আপনি নিজেই ঘরে বসে   https://bdris.gov.bd/br/application আবেদন করতে হবে।

2. প্রশ্নঃ একজন ব্যক্তি কি একাধিক বার জন্মনিবন্ধন করতে পারবে?

উত্তরঃ না, একজন ব্যক্তি একাধিক বার জন্ম নিবন্ধন করতে পারবেনা বরং এটি দন্ডনীয় আপরাধ। যদি আপনি অনলাইন জন্ম নিবন্ধন চেক করে একাধিক আবেদন পত্র তাহলে আপনাকে একের অধিক আবেদন বাতিল করতে হবে অন্যথায় আপনার উভয় আবেদন বাতিল বলে গন্য হবে।

3.প্রশ্নঃ বিবাহিত নারীর জন্ম নিবন্ধনে কি স্বামীর নাম লিখা যাবে?

উত্তরঃ না, জন্ম নিবন্ধনে কোনো ভাবেই স্বামীর নাম লিখা যাবে না। তাই বিবাহিত নারীদেরও জন্ম সনদে পিতামাতার নামই দিতে হয়।

4. প্রশ্ন: জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কত টাকা লাগবে?

উত্তর: জন্ম নিবন্ধনে এখন তারিখ সংশোধন করা যায় না অন্যান্য তথ্য সংশোধনে ৫০ টাকা ফি দিতে হয়।

5. প্রশ্নঃ বাংলাদেশে জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি কাগজপত্র লাগে?

উত্তর: 45 mmX35 mm সাইজের সাম্প্রতিক ছবি৷ এসএসসি/এনআইডি/হাসপাতালের জন্ম সংক্রান্ত নথি (বাংলাদেশী জন্মগ্রহণকারী আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে)

6. প্রশ্নঃ জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে কত সময় লাগে?

উত্তর: আবেদনপত্র একই দিনে করা যায়। তবে ক্ষেত্র বিশেষে ৩-৫ কার্যদিবস লাগতে পারে।

7. প্রশ্নঃ জন্ম নিবন্ধন কোথায় করতে হয়?

উত্তর: সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা কার্যালয়/স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ জন্ম নিবন্ধন করতে হয়।

8. প্রশ্নঃ জন্ম নিবন্ধন কতবার সংশোধন করা যায়?

উত্তর: নিয়ম অনুযায়ী ৫ বার আবেদন করা যায়। তার অধিক আবেদন করা যায় না।

9. প্রশ্নঃ জন্ম নিবন্ধন আবেদনের ওয়েবসাইট কি?

উত্তর: আবেদনের ওয়েব সাইট: www.bdris.gov.bd

10. প্রশ্নঃ জন্ম নিবন্ধন যাচাই করবো কিভাবে?

উত্তর: জন্ম নিবন্ধন আবেদন যাচাই করতে হয় অনলাইনে। ওয়েবসাইট লিংক: https://everify.bdris.gov.bd/