ই-পাসপোর্ট বাংলাদেশ 2024 – আবেদন, ফি, সুবিধা ও সকল তথ্য

পাসপোর্ট

১. ভূমিকা

ই-পাসপোর্ট বা ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট হলো বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট যা একটি ইলেকট্রনিক চিপ সহ ইস্যু করা হয়। এই চিপে পাসপোর্টধারীর বায়োমেট্রিক তথ্য যেমন আঙ্গুলের ছাপ, চোখের আইরিশ স্ক্যান এবং ডিজিটাল ছবি সংরক্ষিত থাকে। ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট চালু হয়েছে।

ই-পাসপোর্ট কী?

ই-Passport হলো মেশিন রিডেবল passport (এমআরপি) আধুনিক সংস্করণ। এটি একটি ইলেকট্রনিক চিপ, অ্যান্টেনা এবং মাইক্রোপ্রসেসর সমন্বিত । এই চিপে পাসপোর্টধারীর নাম, জন্ম তারিখ, ঠিকানা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষিত থাকে। এছাড়াও এতে থাকে ১০টি আঙ্গুলের ছাপ, চোখের আইরিশ স্ক্যান এবং ডিজিটাল ছবি।

E-passport এর গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা

ই-Passport ৩৮টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকায় জালিয়াতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।এটি ব্যবহার করে ভ্রমণকারীরা খুব দ্রুত ও সহজে ই-গেট দিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে পারবেন। ফলে ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না এবং অভিবাসন প্রক্রিয়া দ্রুততর হবে।

এর মাধ্যমে ইন্টারপোল এবং অন্যান্য বিমান ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সহজেই ভ্রমণকারীর তথ্য যাচাই করতে পারবে। এতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বা অন্য কোনো সমস্যা থাকলে তা সঙ্গে সঙ্গে ধরা পড়বে।

ই-পাসপোর্ট চালুর পটভূমি

২০১০ সালে বাংলাদেশে মেশিন রিডেবল পাসপোট (এমআরপি) চালু হয়। কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশ ইতোমধ্যে ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থা চালু করেছে। তাই বাংলাদেশও ই-Passportচালুর উদ্যোগ নেয়।

প্রথমে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে এটি চালুর কথা ছিল। কিন্তু কয়েকবার পিছিয়ে অবশেষে ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি এটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়।বাংলাদেশ বিশ্বের ১১৯তম দেশ হিসেবে ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থা চালু করেছে

E-Passport এর বৈশিষ্ট্য ও সুবিধা

প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য

এটি একটি ইলেকট্রনিক চিপ, অ্যান্টেনা এবং মাইক্রোপ্রসেসর থাকে। এই চিপে পাসপোর্টধারীর নাম, জন্ম তারিখ, ঠিকানা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষিত থাকে।এছাড়াও এতে থাকে ১০টি আঙ্গুলের ছাপ, চোখের আইরিশ স্ক্যান এবং ডিজিটাল ছবি। এতে চিপের তথ্য Public Key Infrastructure (PKI) এর মাধ্যমে যাচাই করা হয়।

PKI
Public key infrastructure

ই-পাসপোর্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থা

এটি ৩৮টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকায় জালিয়াতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।এর অনেক বৈশিষ্ট্য লুকানো অবস্থায় থাকে।ফলে একজনের নাম-পরিচয় দিয়ে অন্য নামে Passport করা বা নকল করা প্রায় অসম্ভব।।

E-Passport ব্যবহারের সুবিধা

ই-Passport ব্যবহার করে ভ্রমণকারীরা খুব দ্রুত ও সহজে ই-গেট দিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে পারবেন। ফলে ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না এবং অভিবাসন প্রক্রিয়া দ্রুততর হবে।

ই-গেটে Passport রাখলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি তুলে নেওয়া হবে এবং আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করা হবে। সব ঠিক থাকলে সবুজ বাতি জ্বলবে এবং ভ্রমণকারী ইমিগ্রেশন পার হয়ে যেতে পারবেন। কোনো সমস্যা থাকলে লাল বাতি জ্বলে উঠবে।

৩. ই-পাসপোর্ট আবেদনের প্রক্রিয়া

অনলাইনে E-Passport আবেদনের ধাপ

ঘরে বসেই অনলাইনে আবেদন করা যায়। আবেদনের ধাপগুলো হলো:

১. প্রথমে ই-পাসপোর্ট পোর্টালে (www.epassport.gov.bd) প্রবেশ করুন।

e passport official site
e passport official site

২. ‘অ্যাপ্লাই অনলাইন ফর E-Passport’ বাটনে ক্লিক করে আবেদন ফরম পূরণ করুন।ফরমে ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা, পেশা ইত্যাদি দিতে হবে।

৩. এর মেয়াদ (৫/১০ বছর) এবং পৃষ্ঠা সংখ্যা (৩২/৪৮/৬৪) নির্বাচন করুন।

৪. অনলাইন পেমেন্ট অপশন ব্যবহার করে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করুন।

৫. আবেদন সাবমিট করার পর অ্যাপয়েন্টমেন্ট তারিখ ও সময় পাবেন।নির্দিষ্ট সময়ে পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হয়ে ছবি ও আঙ্গুলের ছাপ দিন।

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

আবেদনের জন্য নিম্নোক্ত কাগজপত্র প্রয়োজন:

  • জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ
  • পুরাতন পাসপোর্ট (যদি থাকে)
  • ১৮ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে অভিভাবকের আইডি ও ছবি
  • সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে অনাপত্তিপত্র (NOC)
  • বিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রে বিবাহ সনদ

আবেদনের ফি এবং পরিশোধের পদ্ধতি নিম্নরূপ:

পাসপোর্টের ধরনমেয়াদপৃষ্ঠা সংখ্যাডেলিভারি পদ্ধতিফি
ই-পাসপোর্ট৫ বছর৩২ পৃষ্ঠারেগুলার (২১ দিন)৩,৫৭৫ টাকা
৫ বছর৩২ পৃষ্ঠাএক্সপ্রেস (১০ দিন)৫,৮৭৫ টাকা
৫ বছর৩২ পৃষ্ঠাসুপার এক্সপ্রেস (২ দিন)৮,৩২৫ টাকা
৫ বছর৪৮ পৃষ্ঠারেগুলার (২১ দিন)৫,০৫০ টাকা
৫ বছর৪৮ পৃষ্ঠাএক্সপ্রেস (১০ দিন)৭,৩৫০ টাকা
৫ বছর৪৮ পৃষ্ঠাসুপার এক্সপ্রেস (২ দিন)৯,৮০০ টাকা
১০ বছর৬৪ পৃষ্ঠারেগুলার (২১ দিন)৮,০৫০ টাকা
১০ বছর৬৪ পৃষ্ঠাএক্সপ্রেস (১০ দিন)১০,৩৫০ টাকা
১০ বছর৬৪ পৃষ্ঠাসুপার এক্সপ্রেস (২ দিন)১৩,৮০০ টাকা

E-Passport ফি পরিশোধের পদ্ধতি:

  • অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে ফি পরিশোধ করা যায়।
  • বিকাশ, রকেট, নগদ ইত্যাদি মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতিতে ফি জমা দেওয়া যায়।
  • ব্যাংকের মাধ্যমেও ফি পরিশোধ করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে আবেদনপত্র সঙ্গে নিয়ে ব্যাংকে যেতে হবে।

তাই দেখা যাচ্ছে, E-Passport ফি Passport মেয়াদ, পৃষ্ঠা সংখ্যা এবং ডেলিভারি পদ্ধতির উপর নির্ভর করে। আর ফি পরিশোধ করা যায় অনলাইন পেমেন্ট, মোবাইল ব্যাংকিং বা ব্যাংকের মাধ্যমে।

৪.E-Passport প্রাপ্তির সময়সীমা

সাধারণ, জরুরি এবং অতি জরুরি ক্ষেত্রে প্রাপ্তির সময়

এটি প্রাপ্তির সময় নির্ভর করে আবেদনের ধরনের উপর। সাধারণত তিন ধরনের আবেদন করা যায়:

১. সাধারণ আবেদন (রেগুলার/নরমাল): এক্ষেত্রে পেতে প্রায় ২১ দিন বা এক মাস সময় লাগে।

২. জরুরি আবেদন (এক্সপ্রেস): জরুরি ভিত্তিতে আবেদন করলে ৭-১০ দিনের মধ্যে পাওয়া যায়।

৩. অতি জরুরি আবেদন (সুপার এক্সপ্রেস): খুব জরুরি প্রয়োজনে এই পদ্ধতিতে আবেদন করে মাত্র ২ দিনেই ই-পাওয়া সম্ভব।

তবে জরুরি ও অতি জরুরি আবেদনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য। সাধারণ, এক্সপ্রেস ও সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির ফি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।

ই-Passport আবেদনের স্ট্যাটাস ট্র্যাকিং

এর জন্য অনলাইনে আবেদন করার পর আবেদনকারী তার আবেদনের অবস্থা বা স্ট্যাটাস ট্র্যাক করতে পারেন। এজন্য এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের এই লিংকে ভিজিট করতে হবে:

সাইট লিংক- https://www.epassport.gov.bd/authorization/application-status

application status check
application status check

এখানে গিয়ে আবেদনের আইডি নম্বর দিয়ে লগইন করলেই চলমান আবেদনের বর্তমান অবস্থা দেখা যাবে। মোট ১০টি ধাপে আবেদনের স্ট্যাটাস আপডেট হয়। যেমন:

১. Submitted: আবেদন সফলভাবে জমা হয়েছে

২. Appointment Scheduled: বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্টের তারিখ ঠিক হয়েছে

৩. Enrolment in Process: এনরোলমেন্ট প্রক্রিয়া চলছে

৪. Enrolment Complete: এনরোলমেন্ট সম্পন্ন হয়েছে

৫. QC in Progress: কোয়ালিটি চেক চলছে

৬. QC Complete: কোয়ালিটি চেক সম্পন্ন

৭. Printing in Progress: পাসপোর্ট প্রিন্টিং চলছে

৮. Printed: পাসপোর্ট প্রিন্ট সম্পন্ন

৯. Dispatched: পাসপোর্ট ডেলিভারির জন্য পাঠানো হয়েছে

১০. Delivered: পাসপোর্ট বিতরণ সম্পন্ন

এভাবে ধাপে ধাপে অনলাইনে আবেদনের অবস্থা ট্র্যাক করে আবেদনকারী প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন। তবে সাধারণত ২১ থেকে ৩০ দিনের মধ্যেই E-Passport প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

E-Passport আবেদন বাতিল বা সংশোধন

ই-Passport আবেদন বাতিল করার প্রক্রিয়া খুবই সহজ। আবেদন সাবমিট করার পর আর নিজে সংশোধন করা যায় না। তবে কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে আবেদন বাতিল করা সম্ভব।

আবেদন বাতিল করতে হলে প্রথমে এর পোর্টালে লগইন করে ‘আবেদন বাতিল’ অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর কারণ উল্লেখ করে আবেদন জমা দিতে হবে।আবেদন বাতিল হলে Passport ফি ফেরত পাওয়া যাবে না।

আবেদনে ভুল থাকলে তা সংশোধনের জন্য Passport অফিসে লিখিত আবেদন করতে হবে।আবেদনের সাথে ভুল সংশোধনী বিবরণী ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্টে রূপান্তর

পুরাতন মেশিন রিডেবল Passport (এমআরপি) থেকে E-Passport রূপান্তর করা যায়। এজন্য অনলাইনে ই-পাসপোর্ট পোর্টালে আবেদন করতে হবে।

আবেদনের সময় পুরাতন এমআরপি’র তথ্য দিতে হবে। এরপর ফি পরিশোধ করে বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্টের তারিখ নিতে হবে। এমআরপি’র মেয়াদ, পৃষ্ঠা সংখ্যা ইত্যাদি অপরিবর্তিত থাকবে।

ই-Passport হারিয়ে গেলে করণীয়

দেশের ভেতরে হারিয়ে গেলে সর্বপ্রথম থানায় জিডি করতে হবে। এরপর E-Passport পোর্টালে অনলাইনে রি-ইস্যুর আবেদন করতে হবে।

বিদেশে বা যারা প্রবাসী রয়েছে এটি হারালে দ্রুত বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হবে। তারা হারানো Passport বাতিল করে নতুন পাসপোর্ট বা ইমার্জেন্সি ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যু করবে।

৬. ই-Passport ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

E-Passport ব্যবহারের ক্ষেত্র বৃদ্ধি

Passport চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশ পাসপোর্ট ব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। ভবিষ্যতে এর ব্যবহার আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে ঢাকার উত্তরা, যাত্রাবাড়ী ও আগারগাঁও আঞ্চলিক অফিস থেকে ই-Passport সেবা দেওয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে দেশের ৭২টি আঞ্চলিক ও জেলা Passport অফিসে এই সেবা চালু করা হবে।

ভবিষ্যতে বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে ই-গেট স্থাপন করে E-Passport ব্যবহারের পরিধি আরও বাড়ানো হবে। ইতোমধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৫০টি ই-গেট স্থাপন করা হয়েছে।বেনাপোল স্থলবন্দরে ৪টি ই-গেট গত ০৪/০৩/২০২৩ তারিখে উদ্বোধন করা হয়েছে।এছাড়া বাংলাবান্দা স্থলবন্দরে ২টি ই-গেট স্থাপনের কাজ চলছে।

সেবার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ

সেবার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে পরিষেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে পাসপোর্টের আবেদন ও পুনর্নবীকরণ প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে।

E-Passport ওয়েবসাইটের ডিজিটাল ইন্টারফেসের নিরাপত্তা ও ব্যবহারকারী বান্ধব করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অনলাইনে আবেদন, ফি প্রদান, স্ট্যাটাস ট্র্যাকিং ইত্যাদি প্রক্রিয়া আরও উন্নত করা হবে।

ভবিষ্যতে এর মেয়াদ ১০ বছর থেকে বাড়িয়ে ১৫ বছর করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া E-Passport পৃষ্ঠা সংখ্যা বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে ভ্রমণকারীদের আরও সুবিধা হবে।

৭. উপসংহার

ই-Passport এর সার্বিক গুরুত্ব এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এর ভূমিকা অপরিসীম। এর প্রবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশ পাসপোর্ট ব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। এটি দেশের ডিজিটাল রূপান্তরের অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

E-Passport অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও বিশেষ নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি ব্যবহার অনেক নিরাপদ ও সুবিধাজনক।এটি জালিয়াতি রোধ করার পাশাপাশি দ্রুত ও সহজ অভিবাসন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে। ফলে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ আরও নিরাপদ ও সহজতর হচ্ছে।

এটি চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বে ১১৯তম দেশ হিসেবে এই ডিজিটাল সুবিধা নিশ্চিত করেছে। এটি বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার পাশাপাশি ডিজিটাল অগ্রগতির বার্তা বহন করছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।এটি ডিজিটাল প্রশাসন, ডিজিটাল নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশনের অংশ।

ই-Passport প্রবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ডিজিটাল যুগে যোগ দিয়েছে।এটি দেশের প্রশাসনিক কাঠামোকে আরও আধুনিক ও গতিশীল করতে সহায়তা করছে। সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়াকেও এটি ত্বরান্বিত করছে।

সর্বোপরি ই-Passport উন্নত প্রযুক্তি ও ডিজিটাল সমাধানের মাধ্যমে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করে ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পকে বাস্তবে রূপ দিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এটি দেশকে ডিজিটাল ও স্মার্ট জাতি হিসেবে গড়ে তোলার অগ্রযাত্রায় আরেকটি সোপান যুক্ত করেছে।

কিছু সাধারণ প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন: E-Passport কিভাবে ডাউনলোড করব?

উত্তর: ই-Passport ডাউনলোড করার কোনো সুযোগ নেই। এটি শুধুমাত্র Passport অফিস থেকে সংগ্রহ করা যায়। তবে এর অনলাইন স্ট্যাটাস ট্র্যাক করা যায়।

প্রশ্ন: ১০ বছর মেয়াদি Passport করতে কত টাকা লাগে?

উত্তর: ১০ বছর মেয়াদী ৬৪ পৃষ্ঠার E-Passport ফি নির্ভর করে ডেলিভারি পদ্ধতির উপর। রেগুলার ডেলিভারির (২১ দিন) জন্য ৮,০৫০ টাকা, এক্সপ্রেস ডেলিভারির (১০ দিন) জন্য ১০,৩৫০ টাকা এবং সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির (২ দিন) জন্য ১৩,৮০০ টাকা ফি প্রযোজ্য।

প্রশ্ন: Passport কত প্রকার ও কি কি?

উত্তর: বাংলাদেশে তিন ধরনের Passport রয়েছে – সাধারণ (নীল/কালো), অফিসিয়াল (সবুজ) এবং ডিপ্লোম্যাটিক (লাল)। সাধারণ পাসপোর্ট সাধারণ নাগরিকদের জন্য, অফিসিয়াল হলো সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য এবং ডিপ্লোম্যাটিক হলো কূটনীতিকদের জন্য ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন: কোন কোন ব্যাংক Passport ফি গ্রহণ করে?

উত্তর: বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত বেশ কয়েকটি ব্যাংক ফি গ্রহণ করে। এর মধ্যে রয়েছে সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক ইত্যাদি। এছাড়া বিকাশ, নগদ, রকেট সহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতিতেও Passport ফি পরিশোধ করা যায়।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের লাল পাসপোর্ট কারা পায়?

উত্তর: বাংলাদেশের লাল পাসপোর্ট বা ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্ট পান রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, কনসাল জেনারেল, কনসাল, ভাইস কনসাল, এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্ট পেয়ে থাকেন।

প্রশ্ন: পাসপোর্টে নাম ও পদবি কি?

উত্তর: পাসপোর্টে নাম হলো পাসপোর্টধারীর পুরো নাম যা জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদে উল্লেখিত আছে। পাসপোর্টে কোনো পদবি যুক্ত করা হয় না। তবে ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্টে ব্যক্তির পদবি উল্লেখ করা হয়। সাধারণ পাসপোর্টে শুধুমাত্র নাম, জন্ম তারিখ, লিঙ্গ, জাতীয়তা, মেয়াদ ইত্যাদি তথ্য থাকে।