অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করার সহজ পদ্ধতি

জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড

জন্ম নিবন্ধন সনদ হলো একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস  যা প্রত্যেক নাগরিকের পরিচয় নিশ্চিত করে। এটি জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে, যেমন স্কুলে ভর্তি, চাকরি, পাসপোর্ট, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, বিবাহ নিবন্ধনসহ নানা প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায় বিভিন্ন কারণে মানুষ তাদের এই গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র হারিয়ে ফেলেন বা নষ্ট হয়ে যায়।

তবে এখন আর চিন্তার কোন কারণ নেই। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে এখন ঘরে বসেই অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করা সম্ভব। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই শুনেছেন। আপনার স্মার্টফোন বা কম্পিউটার ব্যবহার করেই মাত্র কয়েক মিনিটে আপনি আপনার হারিয়ে যাওয়া বা নষ্ট হওয়া জন্ম সনদ ফিরে পেতে পারেন।

তাহলে আর দেরি কেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে ঘরে বসে সহজেই অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করা যায়। নিম্নে আমরা ধাপে ধাপে সেই প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করব। পাশাপাশি জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও তুলে ধরব। 

জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য

জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করার জন্য যে সকল প্রয়োজনীয় তথ্য ও উপকরণ লাগবে। নিচে সেগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

১. ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর

১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন
১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন সনদ
  • জন্ম নিবন্ধনের সময় প্রদত্ত ১৭ ডিজিটের নম্বরটি থাকতে হবে। এটি ছাড়া অনলাইনে সনদ ডাউনলোড করা যাবে না।
  • ১৬ ডিজিটের পুরনো নম্বর দিয়ে অনলাইনে সনদ পাওয়া যাবে না।1

২. জন্ম তারিখ

  • ১৭ ডিজিট নম্বরের পাশাপাশি সঠিক জন্ম তারিখ প্রদান করতে হবে।1

৩. ইন্টারনেট সংযোগ

  • একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট কানেকশন প্রয়োজন হবে।16

৪. ওয়েব ব্রাউজার

  • জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট everify.bdris.gov.bd -এ প্রবেশ করতে হবে।16

৫. ডাউনলোড করা সনদের ব্যবহার

  • ডাউনলোড করা সনদটি প্রিন্ট করে বা ডিজিটাল কপি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।1
  • তবে অনলাইন কপি দিয়ে সব ক্ষেত্রে কাজ না হতে পারে, মূল কপির প্রয়োজন হতে পারে।

৬. অন্যান্য

  • শুধুমাত্র অনলাইনে থাকা ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন এভাবে ডাউনলোড করা সম্ভব।
  • হারিয়ে যাওয়া বা নষ্ট হওয়া সনদ পুনরায় ডাউনলোড করা যায় এই পদ্ধতিতে।
  • তাই জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করতে এই তথ্যগুলো জানা ও প্রস্তুত রাখা জরুরি। পাশাপাশি অনলাইন কপি ও মূল কপির ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা রাখাও গুরুত্বপূর্ণ।

কি কি উপায়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করা যায়?

আমরা জানি সাধারনত  দুটি উপায়ে  জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করা যায় তা হলো:

১. অনলাইনে ডাউনলোড:

  • জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট everify.bdris.gov.bd -এ প্রবেশ করে ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে খুব সহজেই অনলাইন কপি ডাউনলোড করা যায়।
  • তবে এটি শুধুমাত্র ১৭ ডিজিটের অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ১৬ ডিজিটের পুরনো জন্ম সনদ এভাবে পাওয়া যাবে না।

২. ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগ্রহ:

  • স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ অফিস থেকে সরাসরি জন্ম সনদের কপি সংগ্রহ করা যায়।
  • এক্ষেত্রে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে আবেদন করতে হয়। ফি’র পরিমাণ আবেদনকারীর বয়স ও সংশোধনের ধরনের উপর নির্ভর করে।
  • ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সনদ সংগ্রহ করলে মূল কপি পাওয়া যায়।

তাই সারমর্মে বলা যায়, অনলাইন এবং ইউনিয়ন পরিষদ – এই দুই উপায়েই নাগরিকরা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সহজে জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড বা সংগ্রহ করতে পারেন। অনলাইনে ডাউনলোড দ্রুত ও সহজ হলেও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মূল কপি পাওয়ার সুবিধা রয়েছে।

কিভাবে জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করবেন অনলাইন থেকে

জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করার অনলাইন পদ্ধতি নিম্নরূপ:

১. ওয়েবসাইটে প্রবেশ:

প্রথমে আপনাকে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://everify.bdris.gov.bd/ এ প্রবেশ করতে হবে। এজন্য আপনার একটি ইন্টারনেট সংযোগ, কম্পিউটার বা স্মার্টফোন প্রয়োজন হবে।

২. জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রদান:

ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে একটি ফর্ম দেখতে পাবেন। সেখানে প্রথমে আপনার ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বরটি প্রদান করতে হবে। ১৬ ডিজিটের পুরাতন নম্বর থাকলে শেষে “০” যোগ করে ১৭ ডিজিটে রূপান্তর করতে হবে।

৩. জন্ম তারিখ নির্বাচন:

জন্ম নিবন্ধন নম্বরের পরের ঘরে আপনার সঠিক জন্ম তারিখ সিলেক্ট করতে হবে। এটি করার জন্য ক্যালেন্ডার আইকনে ক্লিক করে দিন, মাস ও বছর বাছাই করুন।

৪. ক্যাপচা পূরণ:

জন্ম তারিখের নিচে একটি ক্যাপচা কোড দেখতে পাবেন। সেটি সঠিকভাবে বক্সে লিখতে হবে। এটি নিরাপত্তার জন্য করা হয়।

৫. Search বাটনে ক্লিক:

সবকিছু সঠিকভাবে পূরণ করা হলে Search বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর আপনার জন্ম সনদের তথ্য দেখা যাবে।

৬. ডাউনলোড করা:

Download Birth certificate
online birth certificate download bd

জন্ম সনদের তথ্য যাচাই করার পর Download বাটনে ক্লিক করলে সনদটি PDF আকারে ডাউনলোড হবে। এটি প্রিন্ট করে বা ডিজিটাল কপি হিসেবে সংরক্ষণ করা যাবে।

উদাহরণ:

ধরুন, আপনার জন্ম নিবন্ধন নম্বর 19954613205000173 এবং জন্ম তারিখ 12/08/1995। তাহলে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে প্রথম ঘরে 19954613205000173 লিখুন। পরের ঘরে ক্যালেন্ডার থেকে 12 আগস্ট 1995 সিলেক্ট করুন। ক্যাপচা কোড দিয়ে Search বাটনে ক্লিক করলে আপনার জন্ম সনদের তথ্য দেখা যাবে। Download করে নিন।

মনে রাখবেন:

  • শুধুমাত্র ১৭ ডিজিটের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন এভাবে ডাউনলোড করা যায়।
  • ১৬ ডিজিটের পুরাতন সনদ অনলাইনে পাওয়া যাবে না।
  • অনলাইন কপি দিয়ে সব ক্ষেত্রে কাজ নাও হতে পারে, মূল কপির প্রয়োজন হতে পারে।

তাই খুব সহজেই ঘরে বসে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করা যায়। শুধু প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ধাপগুলো অনুসরণ করলেই কাজটি সম্পন্ন হবে।

কিভাবে জন্ম নিবন্ধন সনদ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগ্রহ করবেন:

১. আবেদন ফরম সংগ্রহ:

প্রথমে আপনাকে নিকটস্থ ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে গিয়ে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। ফরমটি অফিস থেকে বিনামূল্যে পেতে পারেন।

২. ফরম পূরণ:

সংগৃহীত ফরমটি যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। ফরমে শিশুর নাম, জন্ম তারিখ, পিতা-মাতার নাম, ঠিকানা ইত্যাদি তথ্য দিতে হবে।

৩. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা:

পূরণকৃত আবেদন ফরমের সাথে জন্মের সময়ের হাসপাতালের সনদ, পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট সাইজ ছবি ইত্যাদি কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

৪. ফি প্রদান:

জন্ম নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হবে। ফি’র পরিমাণ শিশুর বয়স ও সংশোধনের ধরনের উপর নির্ভর করে।যেমন:

  • ৪৫ দিন থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুর জন্য ২৫ টাকা + ১৫% ভ্যাট
  • ৫ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তির জন্য ৫০ টাকা
  • জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য ১০০ টাকা

৫. সনদ গ্রহণ:

আবেদন ফরম জমা ও ফি প্রদানের পর কয়েক দিনের মধ্যেই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করতে পারবেন। এটিই হবে আপনার জন্ম সনদের মূল কপি।

উদাহরণ:

ধরুন, আপনি আপনার ৩ মাস বয়সী শিশুর জন্ম নিবন্ধন করাতে চান। এজন্য আপনাকে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে আবেদন ফরম নিয়ে তা পূরণ করতে হবে। ফরমের সাথে শিশুর জন্মের হাসপাতালের কাগজপত্র, আপনার ও স্ত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং শিশুর পাসপোর্ট সাইজ ছবি জমা দিতে হবে। এরপর ২৫ টাকা + ১৫% ভ্যাট ফি প্রদান করলে কয়েক দিনের মধ্যে আপনি শিশুর জন্ম নিবন্ধন সনদ পেয়ে যাবেন।

তাই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করা একটি সহজ প্রক্রিয়া। শুধু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফি প্রদান করলেই চাহিদা অনুযায়ী জন্ম সনদ পাওয়া যায়। তবে এটি জন্ম সনদের মূল কপি, যা অনলাইন কপি থেকে ভিন্ন।

হারিয়ে যাওয়া বা নষ্ট হওয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ পুনরায় ডাউনলোড করার পদ্ধতি নিম্নরূপ:

অনেক সময় বিভিন্ন কারনে আমাদের Birth certificate টি হারিয়ে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়, কিন্তু তখন আমাদের ঠিকই জন্ম  সনদ প্রয়োজন হয়,  আমাদের পুনরায় জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করতে হয়, তাই আমরা কিভাবে আমাদের online Birth certificate download  করব পুনরায় তা নিম্নে সহজ ভাবে উপস্থাপন করা হল।

জন্ম সনদ পুনরায় ডাউনলোড
কিভাবে জন্ম সনদ পুনরায় ডাউনলোড করবেন।

১. ওয়েবসাইটে প্রবেশ:

প্রথমে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://everify.bdris.gov.bd/ -এ প্রবেশ করতে হবে।

২. E-Verify -এ ক্লিক:

ওয়েবসাইটের হোমপেজে “E-Verify” অপশনে ক্লিক করতে হবে। এটি জন্ম সনদ যাচাইয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়।

৩. জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রদান:

E-Verify পেজে নির্দিষ্ট ফিল্ডে আপনার ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বরটি টাইপ করুন। এটি আপনার পুরনো জন্ম সনদে উল্লেখ থাকবে।

৪. জন্ম তারিখ নির্বাচন:

জন্ম নিবন্ধন নম্বরের নিচে জন্ম তারিখ নির্বাচন করার অপশন রয়েছে। সেখান থেকে আপনার সঠিক জন্ম তারিখ সিলেক্ট করুন।

৫. ক্যাপচা কোড প্রদান:

জন্ম তারিখের নিচে একটি ক্যাপচা কোড দেওয়া থাকে। সেটি সঠিকভাবে নির্দিষ্ট বক্সে লিখতে হবে।

৬. “Search” বাটনে ক্লিক:

তথ্য প্রদানের পর “Search” বা “Submit” বাটনে ক্লিক করলে আপনার জন্ম সনদের তথ্য স্ক্রিনে দেখা যাবে।

৭. ডাউনলোড বাটনে ক্লিক:

জন্ম সনদের তথ্য যাচাই করার পর “Download” বাটনে ক্লিক করলে সনদটি PDF ফরম্যাটে ডাউনলোড হবে। এটি প্রিন্ট করে বা ডিজিটাল কপি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।

মনে রাখবেন:

  • শুধুমাত্র ১৭ ডিজিটের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন এই পদ্ধতিতে ডাউনলোড করা যাবে।
  • ১৬ ডিজিটের পুরাতন জন্ম নিবন্ধন এভাবে পাওয়া যাবে না।
  • ডাউনলোড করা কপি দিয়ে সব ক্ষেত্রে কাজ নাও হতে পারে, মূল কপির প্রয়োজন হলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগ্রহ করতে হবে।

সুতরাং, হারিয়ে যাওয়া বা নষ্ট হওয়া জন্ম সনদ পুনরুদ্ধারের জন্য অনলাইন পদ্ধতিটি খুবই কার্যকর। মাত্র কয়েকটি তথ্য প্রদান করেই ঘরে বসে জন্ম সনদ ডাউনলোড করা সম্ভব। তবে প্রয়োজনে ইউনিয়ন পরিষদের সাথেও যোগাযোগ করা উচিত।

কেন জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড প্রয়োজনীয় ?

জন্ম নিবন্ধন সনদ একজন নাগরিকের জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আইনি দলিল। এটি শুধুমাত্র পরিচয় নির্ধারণেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং একজন ব্যক্তির বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রীয় পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রেও অপরিহার্য। নিম্নে জন্ম নিবন্ধন সনদের প্রয়োজনীয়তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:

১. আইনি পরিচয় নিশ্চিতকরণ:

জন্ম সনদ একজন ব্যক্তির নাম, জন্ম তারিখ, পিতা-মাতার নাম, জন্মস্থান ইত্যাদি তথ্য প্রমাণ করে। এটি তার বৈধ পরিচয় নির্ধারণ করে।

২. নাগরিক অধিকার নিশ্চিতকরণ:

জন্ম নিবন্ধন শিশুর অধিকার সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি শিশুর পরিচয় নিশ্চিত করে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তিতে সহায়তা করে।

৩. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি:

স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় জন্ম সনদ অপরিহার্য। এটি ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায় না।

৪. চাকরি ও কর্মসংস্থান:

সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে আবেদন, চাকরিতে যোগদান, পেনশন পাওয়ার ক্ষেত্রে জন্ম সনদ আবশ্যক।

৫. পাসপোর্ট ও ভিসা পাওয়া:

বিদেশ ভ্রমণের জন্য পাসপোর্ট ও ভিসা পেতে জন্ম নিবন্ধন সনদ লাগে।এটি নাগরিকত্ব প্রমাণের দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়।

৬. ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও ঋণ পাওয়া:

ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলা, ঋণ নেওয়ার সময় পরিচয়পত্র হিসেবে জন্ম সনদ গ্রহণযোগ্য।

৭. বিবাহ নিবন্ধন:

বিবাহ নিবন্ধনের ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জন্ম সনদ আবশ্যক। এটি তাদের বৈধ পরিচয় ও বয়স নিশ্চিত করে।

৮. ভোটার তালিকাভুক্তি:

ভোটার হিসেবে নিবন্ধনের জন্য জন্ম তারিখ প্রমাণের সর্বোত্তম উপায় হলো জন্ম সনদ।3

৯. সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী:

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য জন্ম সনদ প্রয়োজন।1 এটি প্রাপ্য সুবিধা নিশ্চিত করে।

১০. আইনি ও প্রশাসনিক কাজে ব্যবহার:

আদালতে মামলা-মোকদ্দমা, সম্পত্তি হস্তান্তর, উত্তরাধিকার প্রমাণের ক্ষেত্রে জন্ম সনদ ব্যবহৃত হয়।

১১. জাতীয় পরিসংখ্যান ও পরিকল্পনা:

দেশের মোট জনসংখ্যা, জন্মহার, মৃত্যুহার ইত্যাদি পরিসংখ্যান প্রস্তুত এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান খাতে জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়নে জন্ম নিবন্ধন তথ্য ব্যবহৃত হয়।

১২. অপরাধ প্রতিরোধ:

শিশু পাচার, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে জন্ম তারিখ যাচাইয়ে জন্ম সনদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

উপসংহার: জন্ম নিবন্ধন সনদ নাগরিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি ব্যক্তি পরিচয় ও অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।তাই প্রত্যেকের উচিত সময়মত জন্ম নিবন্ধন করা ও সনদ সংরক্ষণ করা।

জন্ম নিবন্ধন সনদ সংক্রান্ত সাধারণ কিছু প্রশ্নোত্তর

আপনার প্রবন্ধে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর নিম্নরূপ:

প্রশ্ন: অনলাইনে কিভাবে জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করা যায়?

উত্তর: অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করতে প্রথমে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট everify.bdris.gov.bd -এ প্রবেশ করতে হবে। সেখানে ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর ও জন্ম তারিখ প্রদান করে “Search” বাটনে ক্লিক করলে জন্ম সনদ দেখা যাবে। এরপর “Download” বাটনে ক্লিক করে সনদটি ডাউনলোড করা যাবে।

প্রশ্ন: ১৬ ডিজিটের পুরাতন জন্ম নিবন্ধন কি অনলাইনে ডাউনলোড করা যাবে?

উত্তর: না, ১৬ ডিজিটের পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে ডাউনলোড করা যাবে না। শুধুমাত্র ১৭ ডিজিটের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন এই পদ্ধতিতে ডাউনলোড করা সম্ভব।

প্রশ্ন: জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করার জন্য কি কি প্রয়োজন?

উত্তর: জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করার জন্য প্রয়োজন হবে ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর, জন্ম তারিখ, একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ।

প্রশ্ন: অনলাইনে ডাউনলোড করা জন্ম সনদ কি সব ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে?

উত্তর: অনলাইনে ডাউনলোড করা জন্ম সনদ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে মূল কপির প্রয়োজন হতে পারে। সেক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মূল কপি সংগ্রহ করতে হবে।

প্রশ্ন: জন্ম নিবন্ধন সনদ হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হলে কি করা উচিত?

উত্তর: জন্ম নিবন্ধন সনদ হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হলে অনলাইনে খুব সহজেই নতুন কপি ডাউনলোড করা যায়। এজন্য আগের মতই ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর ও জন্ম তারিখ ব্যবহার করতে হবে।