জাতীয় পরিচয় পত্র: অনলাইন সেবা সম্পর্কে সম্পূর্ণ গাইড

জাতীয় পরিচয় পত্র

জাতীয় পরিচয় পত্র বা National identity card হচ্ছে এমন একটি ব্যক্তিগত ডকুমেন্ট যা ব্যক্তির নাগরিকত্বের প্রমাণ বহন করে। বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য এটি একটি বাধ্যতামূলক নথি। বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি সেবা গ্রহন সহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেতে হলে NID Card প্রয়োজন হয়।

জাতীয় পরিচয় পত্র আমাদের কি কি কাজে লাগে?

জাতীয় পরিচয় পত্র আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সব ধরনের কাজে প্রয়োজন হয়। এটি এমন একটি নথি  যা একজন মানুষকে একটি দেশের নাগরিকত্তের পরিচয় বহন করে।

১ . ব্যাংক হিসাব খোলার জন্য প্রমাণপত্র।

২. ভোটার রেজিস্ট্রেশনের সময় আবশ্যক প্রমাণপত্র।

৩. পাসপোর্ট আবেদনে আইডেন্টিটি প্রমাণকে সনাক্ত করার জন্য।

৪. বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী কাজে আবেদনের সময় আইডেন্টিটি প্রমাণকে সনাক্ত করার জন্য।

৫. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রমাণপত্র হিসাবে।

৬. বাণিজ্যিক কাজে অনুষ্ঠানিক প্রয়োজনে আইডেন্টিটি প্রমাণপত্র।

৭. ভিসা প্রস্তুতির সময় প্রমাণপত্র হিসাবে।

৮. সরকারী অথবা বেসরকারী চাকরিতে আবেদনের সময় প্রমাণপত্র হিসাবে।

জাতীয় পরিচয় পত্র কেন প্রয়োজন?


আপনি যদি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য এই নথি (nid card) বাধ্যতামূলক কিংবা খুবই প্রয়োজন। কেননা আপনার কাছে যদি এনআইডি কার্ড কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকে তাহলে আপনি তেমন কোন সুবিধা পাবেন না।

আপনার ছেলে মেয়েকে যখন আপনি পড়াশুনার জন্যে কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে যাবেন তখন মা বাবার আইডেন্টিটি হিসেবে আপনাদের পরিচয় পত্র প্রয়োজন হবে। আপনার আইডেন্টিটি কার্ড ছাড়া তো আর ছেলেমেয়ের এনআইডি হবে না।

আপনার বিদেশ ভ্রমণ, হজ থেকে শুরু করে ব্যাংক একাউন্ট খুলতেও এখন প্রয়োজন আইডেন্টিটি কার্ড। এমনকি ইলেকশনের সময় আপনি যদি বুট দিতে চান সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়বে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র।

বাস্তবিক জীবেনে এমন কি কোনো সেক্টর আছে যেখানে পরিচয় পত্র হিসেবে এন আইডি কার্ড প্রয়োজন পড়ে না? আপনি যদি আপনার ব্যবসার লাইসেন্স করাতে চান, সে ক্ষেত্রেও প্রয়োজন পড়বে এনআইডি। তাছাড়া সিম রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করি আরো অনেক খাতে প্রয়োজন আমাদের nid। তাছাড়া চলুন কয়েকটা প্রয়োজন এর দিক জেনে আসি –

  • ব্যাংক একাউন্ট খুলতে
  • পাসপোর্ট কিংবা ভিসা করাতে
  • ছেলে মেয়ের ভোটার আইডি কার্ড করাতে
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে চাইলে
  • সরকারি সেবা যেমন অনুদান ও ভাতা ইত্যাদি
  • টিন নাম্বার পেতেও প্রয়োজন এনআইডি
  • ব্যাংক থেকে ঋণ বা লোন নিতে চাইলে
  • চাকরির আবেদন করতে
  • জমিজমা ক্রয় বিক্রয় করতে ইত্যাদি

এগুলো ছাড়াও জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজনের অনেক খাত রয়েছে। তাই আপনি যদি এই সেবাগুলো এবং এ ছাড়াও আরোও অনেক ধরনের সেবা পেতে চান, তাহলে আপনার জন্য বাধ্যতামূলক এনআইডি কার্ড।

জাতীয় পরিচয় পত্র কোথায় প্রয়োজন হয়?

  • জাতীয় ব্যাংক লেনদেনে
  • চাকরি আবেদনে
  • শিক্ষার জন্য আবেদনে
  • নিবন্ধনে

জাতীয় পরিচয় পত্র কীভাবে পাওয়া যায়?

  • অনলাইনে আবেদন করুন
  • নিকটস্থ কার্যালয়ে সরাসরি আবেদন করুন

জাতীয় পরিচয় পত্র প্রাপ্তির জন্য কি কি প্রয়োজন?

  • আবেদনকারীর সনদপত্র
  • জন্মনিবন্ধন
  • আবেদন ফর্ম
  • আবেদনের মূল উদ্দীপনা

জাতীয় পরিচয় পত্র কতদিনে পাওয়া যায় ?

  • সাধারণত ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে

জাতীয় পরিচয় পত্র পাওয়ার পরে কী করতে হবে?

  • নিরাপদ রাখার জন্য সঠিকভাবে সংরক্ষণ করুন।
  • সফট কপি এবং হার্ড কপি সংরক্ষণ করা।

জাতীয় পরিচয় পত্র এর অনলাইন সেবা সমূহ

চলুন এখন আমরা জেনে নেই, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক  কয়েকটা এমন অনলাইন সেবার কথা জেনে নেই যেগুলো হয়তো আমাদের অনেকেিই জানা নেই । যেমন আমরা অনেকেই ভোটার আইডি কার্ড করে ফেলেছি কিন্তু অনলাইন থেকে Nid card download করতে না জানার কারণে আইডি কার্ড হাতে পাইনা।

আবার অনেকের আইডি কার্ড ডাউনলোড করার পর দেখতে পাই যে বিভিন্ন নাম ঠিকানা তাদের মধ্যে ভুল রয়েছে। সেগুলো চাইলে আপনি সংশোধন করতে পারবেন অনলাইন আবেদন করার মাধ্যমে।

এরকম আরো বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইট কর্তৃক অনেকগুলো সেবা পাওয়া যায়। যেগুলো কিনে আমরা এই ওয়েবসাইট কে সঠিক ব্যবহার করে না জানার কারণে করতে পারিনা।

আরো পড়ুন – ভোটার আইডি কার্ড চেক | Nid card check

তাই এখন আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি এমন কয়েকটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সেবা সম্পর্কে। যেগুলো আমাদের কিংবা আমাদের আশেপাশে অনেক মানুষের প্রয়োজন। তাহলে চলুন আমরা সেগুলো জেনে আসি যা সম্পর্কে জানা আমাদের একান্তই প্র্যোজন।

আইডি কার্ড না থাকলে আবেদন করুন

আপনার  ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে, কিন্তু এখনো পর্যন্ত আইডি কার্ড পান নাই? তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই। সহজ একটা প্রক্রিয়া অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অনলাইন এর মাধ্যমে নতুনভাবে আবেদন করতে পারবেন।

বাংলাদেশী নাগরিক ২টি উপায় নতুন ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারে

  • অনলাইনে ভোটার নিবন্ধন আবেদন
  • সরাসরি নির্বাচন অফিসে গিয়ে

নতুন ভোটার হওয়ার জন্য কয়েক বছর আগেও উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার নিবন্ধন ফরম পূরণ করে জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করতে হতো। আবার ৫ বছর অন্তর অন্তর সরকারি উদ্যোগে এলাকা ভিত্তিক নতুন ভোটার নিবন্ধন ক্যাম্পেইন চলে।

তবে তার জন্য নির্দিষ্ট একটা নিয়ম রয়েছে নিয়মটা জানতে চাইলে আপনি ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম এই আর্টিকেলটা পড়ে আসুন আমার ওয়েবসাইট থেকে। এবং সর্বশেষ জেনে নিন আপনাকে কোথায় কি করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কি কি।

ডাউনলোড করুন এনআইডি কার্ড অনলাইন থেকে

আমরা অনেকেই নতুন জাতীয় পরিচয় পত্র করে ফেলেছি। কিন্তু অনেকে ই অনেকদিন অপেক্ষা করে যে, আমার আইডি কার্ড আসছে না কেন? মূলত তারাই জানে না যে, নিজের আইডি কার্ড তৈরি হয়ে গেছে। কিন্তু সঠিক ভাবে ডাউনলোড করতে না জানার কারণে নিজের আইডি কার্ড টা হাতে নিতে পারছে না।

তাই আপনি যদি দেখতে পান যে, আপনার মোবাইলের মধ্যে sms চলে এসেছে রেডি হয়েছে এই বলেই আপনার nid card। তাহলে আর দেরি কেন এখনই ‌nid card download করে নিন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইট থেকে।

ভোটার আইডি কার্ড বা এন আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে প্রয়োজন হবে ভোটার রেজিস্ট্রেশন ফরম নাম্বার, জন্ম তারিখ, ঠিকানা এবং ফেইস ভেরিফিকেশন। নতুন ভোটাররাই অনলাইনে NID কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। আর পুরাতন ভোটাররা জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে অনলাইনে রিইস্যুর আবেদন করতে 

হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন

ভোট দেওয়া ছাড়াও পাসপোর্ট তৈরি ও নবায়ন, যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, চাকরির আবেদন, বিমা স্কিমে অংশগ্রহণ, স্থাবর সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়, বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক হিসাব খোলা, এমন বহু কাজে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) প্রয়োজন পড়ে। সেই এনআইডিতে যদি তথ্যগত ভুল থাকে, তাহলে তো পদে পদে ঝামেলা। কারও হয়তো নিজের নামের বানান ভুল, কারও জন্মতারিখে গরমিল। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধন করতে গিয়েও সঠিক তথ্যের অভাবে অনেকে এখানে-ওখানে ঘুরপাক খান। কেউ পড়েন দালালের খপ্পরে।

তবে সরকার কিন্তু বলছে, নির্ধারিত ওয়েবসাইট ও অ্যাপ থেকে আপনি এনআইডির তথ্য সংশোধন করতে পারবেন। কীভাবে? চলুন, বিস্তারিত জানা যাক।  

জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে পুনরায় উত্তোলন

আপনার আইডি কার্ড হারিয়ে গেছে? তাহলে সেটা পুনরাই উত্তোলনের জন্যে প্রথমেই অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন না । জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে প্রথমে যেখানে হারিয়েছে তার নিকটস্থ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করতে হবে। তারপর জিডি কপি আপলোড করে অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র রিইস্যুর আবেদন করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে কিভাবে উঠানো হয়? নিকটস্থ থানায় একটি জিডি করুন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র রিইস্যুর জন্য অনলাইনে আবেদন করুন।আপনার সবগুলো ডকুমেন্টস যদি ঠিকঠাক থাকে তাহলে নির্বাচন কমিশন তা যাচাই-বাছাই করে আপনার আইডি কার্ডটা পুনরায় ইস্যু করে দিবে।

স্মার্ট কার্ড কি? 

অনেকের মনে এখনও স্মার্ট কার্ড নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন রয়েছে স্মার্ট কার্ড কি? স্মার্ট কার্ডের সুবিধা অসুবিধা স্মার্টকার্ড কত ধরনের সেবা দিবে এর মেয়াদ কত বছর স্মার্ট কার্ড এ কি কি তথ্য থাকে ইত্যাদি। তাই মনে হল আপনাদের মাঝে স্মার্ট কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত এবং সঠিক তথ্যগুলো শেয়ার করলে আপনাদের হয়তো উপকার হবে । তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই স্মার্ট কার্ড বা এনআইডি আর সম্পর্কে। 

আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। আমাদের পরিচয় কে তুলে ধরে জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা এন আইডি কার্ড যাকে আমরা ভোটার আইডি কার্ড বলে থাকি এই এনআইডি কার্ডের ডিজিটাল সংস্করণই হলো স্মার্ট কার্ড বা স্মার্ট এনআইডি কার্ড ।এই এনআইডি কার্ডের ডিজিটাল সংস্করণ হলো স্মার্ট কার্ড বা স্মার্ট এনআইডি কার্ড। স্মার্ট জাতীয় পরিচয় পত্র কে নকল করা প্রায় অসম্ভব সেই কারণে স্মার্ট কার্ডে থাকা নাগরিকের ভোটার তথ্য নিরাপদ এবং সুরক্ষিত থাকে।

কিছু জিজ্ঞাসা

  • জাতীয় পরিচয় পত্র কোথায় প্রয়োজন হয়?
    • জাতীয় ব্যাংক লেনদেনে
    • চাকরি আবেদনে
    • শিক্ষার জন্য আবেদনে
    • নিবন্ধনে
  • জাতীয় পরিচয় পত্র কীভাবে পাওয়া করা যায়?
    • অনলাইনে আবেদন করুন
    • নিকটস্থ কার্যালয়ে সরাসরি আবেদন করুন
  • জাতীয় পরিচয় পত্র প্রাপ্তির জন্য কোন নথি প্রয়োজন?
    • আবেদনকারীর সনদপত্র
    • আবেদন ফর্ম
    • আবেদনের মূল উদ্দীপনা
  • জাতীয় পরিচয় পত্র কতদিনে প্রাপ্ত হয়?
    • সাধারণত ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে
  • জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রাপ্তি পরে কী করতে হবে?
    • নিরাপদ রাখার জন্য সঠিকভাবে সংরক্ষণ করুন।