গোপালপুর গ্রাম শ্রীরামপুর ইউনিয়ন

গোপালপুর গ্রাম শ্রীরামপুর ইউনিয়ন

গোপালপুর গ্রাম শ্রীরামপুর ইউনিয়ন

আমাদের গ্রাম গোপালপুর
ভূমিকাঃ বাংলাদেশের অন্যান্য গ্রামের মতো আমাদের গ্রামটিরও রয়েছে কিছু বৈচিত্র্যময় ঐতিহাসিক স্থান মেঠোপথ। আমাদের গ্রামটির চতুরদিকে রয়েছে চিরচেনা সেই সবুজ শ্যামল মনোমুগ্ধকর দৃশ্য যে দিকেই তাকাই রূপের বাহারে যেন হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে।
আমাদের গ্রামের অবস্থানঃ আমাদের গ্রামের নাম গোপালপুর গ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার শ্রীরামপুর ইউনিয়ন এর গোপালপুর গ্রাম নামে পরিচিত আমাদের ঐতিহাসিক গ্রামটি।আমাদের ঐতিহ্যবাহি গ্রামটি আমাদের থানার থেকে বেশি দূরে নয়,প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে আমাদের নবীনগর সদর থানাটি। ১২নং শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ১,২,৩ও৪ নং ওয়ার্ডের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত আমাদের গ্রাম খানি। উক্ত গ্রামের আশ পাশ দিয়ে গেছে যমুনা নদী যার সঙ্গে মেঘনার মোহনার মিল রয়েছে এবং সৌন্দর্যের সমহার আঁকাবাকা কয়েকটি খালের মেলা যা দিয়ে ছোট বড় নৌকা চলাচলের এক দৃষ্টান্ত প্রতিচ্ছবি আমরা দেখতে পায়।
 
গ্রাম পরিচিতিঃ ১,২,৩,ও ৪ ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত গোপালপুর গ্রামকে প্রায় সবাই চিনে।কারণ নবীনগর থানার ঐতিহাসিক গ্রাম বলে বিবেচিত আমাদের গ্রামটি।যার নাম সূচনার শুরু থেকেই নবীনগরে সাথে মিশে আছে।আশেপাশের গ্রামের কথা বলতে গেলে পশ্চিমে সাহেবনগর ও নাসিরাবাদ গ্রামটি অবস্থিত যাহার সাথে মিলিত অপরূপ সুন্দর্যে ঘেরা মেঘনা নদীটিও। অন্যদিকে গ্রামের দক্ষিনে বিশাল বড় ফসলের জমি লক্ষ করা যায়।
উত্তরে আইতলা গ্রামটি ও মাঝখানে ফসলের জমি যার সাথে অপরূপ রূপে সজ্জিত একটি বিলও আছে আমাদের গ্রামের পাশে।পূর্বদিকে শ্রীরামপুর গ্রামটি অবস্থিত ও পূর্ব উত্তরে রেজতপুর গ্রাম অবস্থিত রয়েছে।
 
আমাদের গ্রামের আয়তন ঃআমাদের গ্রামটি শ্রীরামপুর ইউনিয়ন এর মধ্যে সবচেয়ে বড় একটি গ্রাম।
যার আয়তন প্রায় ৩ কিলোমিটার। আমাদের গ্রাম জনবহুল একটি গ্রাম। আমাদের গ্রামে প্রায় ছয় হাজারের মতো ভোটার রয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় গন্থনাগারঃআমাদের গ্রামে ছোট বড় অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও গোপালপুর সুফিয়া খোরশেদিয়া দাখিল মাদ্রাসা সহ গোপালপুর সুফিয়া এতিমখানও রয়েছে যার প্রতিষ্ঠাতা মরহুম এম এ খোরশেদ আলম কন্ট্রাকট্রর সাহেব।এছাড়াও তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়াও একটি কোরআনে হাফিজিয়া মাদ্রাসাও রয়েছে ও গ্রামে খুবই বড় বড় তিনটি কবরস্থান ও দুইটি শ্মশানও রয়েছে।
 
আর সবচেয়ে বড় মজার বিষয় হলো আমাদের গ্রামে প্রায় ১৪ টি মসজিদ রয়েছে এবং একটি কেন্দীয় ঈদগাহ আছে। সবগুলো মসজিদ মাশাআল্লাহ দেখেতে খুবই সুন্দর এছাড়াও বাজারে একটি শেফালী দীঘি ও একটি পোড়া পুস্কুনি রয়েছে।
এছাড়াও খেলাধুলা করার মতো ছোট বড় প্রায় পাঁচটি খেলার মাঠ রয়েছে, যেখানে প্রতিদিন সকাল বিকাল অনেক ধরনের খেলাধুলা হয়ে থাকে।এছাড়াও একটি সরকারি হাসপাতাল ও একটি কমিউনিটিক্লিনিক আছে যেখানে রোগীর সু সেবা মিলে।
 
আমাদের গ্রামের জীবন ব্যবস্থা ঃআলহামদুলিল্লাহ আমাদের গ্রামের জীবন ব্যবস্থা খুবই ভালো। আমাদের গ্রামের বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত আছেন।দেশে এবং দেশের বাহিরে অসংখ্য সুনাম অর্জন কারী ব্যাক্তিসহ গ্রামের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে কৃষক, জেলে,ও কামার কুমার থেকে মোটামুটি সব পেশায় নিয়োজিত আমাদের গ্রামের মানুষ।তাই জীবন ব্যবস্থাও খুবই ভালো।
 
সুপরিচিত ও সুনামধন্য ব্যাক্তিবর্গঃআলহামদুলিল্লাহ গোপালপুর গ্রামে অসংখ্য সুনামধন্য লোক রয়েছেন।যাদের সুনাম ছড়িয়ে আছে পৃথিবীর নানান প্রান্থে।মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রায় ৬০ জন যুদ্ধা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন অনেকে শহীদ হয়েছিল এবং অনেক মানুষ বিজয়ী নিশান নিয়ে এখনো বেঁচে আছেন যাদের নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি। এছাড়াও এই গ্রামের খুবই আলোচিত ব্যাক্তি বীর মুক্তিযুদ্ধা মরহুম ফারুক সাহেব অতিরিক্ত সচিব বাংলাদেশ ব্যাংক, ও বাংলাদেশ চলচিত্রের মহা নায়ক আলমগীর কে চেনেন না এমন লোক খুবই কমই আছে।এছাড়াও নায়েক আলমগীর সাহেবের সহধর্মিণী ও তার মেয়েও কিন্তু এই গ্রামেরই গর্ব যাদেরকে দেশে ও দেশের বাহির মানুষ এক নামেই চিনে।আর বর্তমান প্রেক্ষাপটে নবীনগর থানায় কোন সুনামধন্য ব্যাক্তি থাকলে যিনি আছেন তিনি হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের সাথে আগড়তলা ষড়যন্ত্রের ১০ নাম্বার আসামি মরহুম সার্জেন্ট মুজিবুর রহমান সাহেবর সুযোগ্য উত্তরসুরী সাবেক সংসদ সদস্য জনাব ফয়জুর রহমান বাদল সাহেব।যার নামটা নবীনগরে চিরকাল স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে।
 
এছাড়াও আমাদের গ্রামে অসংখ্য রাজনীতিবিদ রয়েছেন তাদের মধ্য অন্যতম মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মরহুম আব্দুর রউফ কন্ট্রাকট্রর সাহেব। আমাদের গ্রামে বিসি এস ক্যাডার ও আর্মি পুলিশ সহ সরকারী অসংখ্য উরদ্ধোতন কর্মকর্তা রয়েছেন অনেক ।এদের মধ্য অন্যতম ৩৪ তম বিসি এস ক্যাডার এ এসপি ফয়েজ আহাম্মেদ রতন স্যার। এছাড়াও আরও অনেক গুণীজন যাদের নাম বলে ও লিখে শেষ করা যাবে না।এছাড়াও আমাদের গ্রামে আলেম ওলামা ও শিক্ষক শিক্ষিকা সহ আরও অসংখ্য সুনামধন্য লোক রয়েছেন যাদেরকে দেশের এবং দেশের বাহিরে অসংখ্য মানুষ চিনে জানে।
বুজুর্গ ব্যাক্তিবর্গঃআমাদের গ্রামে অসংখ্য বুজুর্গ ব্যাক্তিবর্গও রয়েছেন। যাদের নাম চিরতরে রয়ে যাবে।হযরত দয়াল বাবা আদুশাহ্ নামে একটি মাজার আছে যার ঐতিহ্য অনেক পুরোনো। এছাড়াও অসংখ্য অলি আউলিয়া ও মনি ঋষি গনের আগমন ও প্রস্থান আমাদের এই ঐতিহ্যবাহি গ্রামে।
 
সাংস্কৃতিক উৎসব ও ঐতিহ্য ঃআমাদের গ্রামে সাংস্কৃতিক উৎসবের বিরল ইতিহাস আছে। কারণ এই গ্রামে হিন্দু মুসলিম একই সাথে বসবাস করে যদিও অন্য ধর্মের লোক তেমন নেই। আমাদের গ্রামে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন খেলাধুলা সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উৎসবের অনুষ্ঠানে মুখরিত থাকে সবসময়।
 
হাটবাজার ও রাস্তাঘাটঃআমাদের গ্রামে প্রধানত দুইটি বাজার লক্ষনীয় একটি হচ্ছে গোপালপুর আদুশাহ বাজার নামে পরিচিত অন্যটি গোপালপুর বড় বাড়ি বাজার নামে পরিচিত যেখানে ছোট বড় সব রকমের দোকান রয়েছে। আমাদের বাজারটি যদিও গ্রামে কিন্তু সুই সূতা থেকে শুরু করে সর্ণের সহ সব রকমের দোকানপাট রয়েছে। সকাল থেকে রাত দশটা পর্যন্ত খোলা থাকে বাজারের দোকানপাট,সেখানে মাছ মাংস থেকে শুরু করে শাক সবজি ইত্যাদি পাওয়া যায়,এবং একে একে তিনটি ব্যাংকের শাখা রয়েছে। এছাড়াও অনেকগুলো মাল্টি পার পাস রয়েছে এবং গ্রামীণ জীবন ব্যবস্থা রয়েছে।এছাড়াও পথের অলিগলি ও রাস্তার মোড়ে অসংখ্য দোকানপাট রয়েছে। আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভাল আমাদের গ্রামের যেকোন পাড়া বা মহল্লা হতে গাড়ি যোগে যেকোন জায়গায় যাতায়াত করতে পারি।এছাড়াও বর্ষা মৌসুমে পানি হলে নৌকা যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভালো আমাদের গ্রামের।
 
উপসংহার ঃনিজ গ্রাম নিয়ে লিখতে কলমের কালি ও কাজগের পৃষ্ঠা শেষ হয়ে যাবে। তবুও লেখা শেষ হবেনা নিজ গ্রামের গুনগান। যেমন কবি বলেছিলেন
 
আমাদের ছোট গায়ে ছোট ছোট ঘর,
যেথায় থাকি সবাই মিলে নাহি কেহ পর।
পার হয়ে যায় গরু পার হয়ে গাড়ি,
দুই ধার উচু তার ডালু তার পাড়ি।
 
কবি ঠিক তাই বলেছিলেন আমাদের গ্রামের অসংখ্য সুনাম রয়েছে । তাই নিজ গ্রাম সম্পর্কে লিখলে লিখে শেষ করা সম্ভব নয়।
ভুলত্রুটি মার্জনীয় সবাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
কারণ এডমিন মডারেটর নির্দেশ ২০০থেকে ২০০০ ওয়ার্ডের ভিতর সীমাবদ্ধ রাখা কিন্তু, কিন্তু নিজ গ্রামকে নিয়ে লিখতে বসলে তো আর কলমের কালি থামতে চায়না, তাই সবার নিকট আবারও ক্ষমাপ্রার্থী কম বেশি হয়ে থাকলে।
ধন্যবাদ 
 
গ্রামের পক্ষে,
মোঃ আল মামুন মিয়া,
গ্রাম+পোস্ট গোপালপুর,
ইউনিয়ন শ্রীরামপুর, থানা নবীনগর
জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
মোবাইল নাম্বার ঃ০১৭২৮৬০৫১৭৮/০১৬২২১৬৫৬৩৪