সরাইলের গ্রে-হাউন্ড কুকুরের ইতিহাস সরাইলের কুকুর দেশ বিদেশে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। দেশ বিদেশের অনেক শৌখিন লোক এই কুকুরের জাত সংগ্রহ করতে পাড়ি জমায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে। সেই সাথে বিভিন্ন দেশের প্রশাসন নিরাপত্তার কাজেও সরাইলের ঐতিহ্যবাহী গ্রে-হাউন্ড কুকুর ব্যাবহার করে থাকেন।
গ্রে হাউন্ড কুকুরের বৈশিষ্ট্য :
এই কুকুরের মুখ সাধারণত কুকুরের চেয়ে অনেকটাই লম্বা, পায়ের নখগুলো বড় বড়, দৃষ্টি শক্তি তীক্ষ্ণ, পা এবং লেজ অনেক লম্বা। এই কুকুর সাধারণ কুকুরের চেয়ে অনেক গুণ শক্তিশালী, অধিক ক্ষিপ্র, কষ্ট সহিষ্ণ। ক্ষিপ্রতার কারণে এদেরকে সাধারণ মানুষ, চোর অথবা ডাকাত একটু বেশি ভয় পাই। শিয়াল, বন বিড়াল এবং বাঘডাস শিকারে এরা খুব পারদর্শী।
গ্রে-হাউন্ড কুকুরের ইতিহাস
ইতিহাস থেকে জানা যায় যে বহুকাল আগে সরাইলের দেওয়ান সাহেব নামে এক ব্যাক্তি হাতির পিঠে চড়ে জঙ্গলে শিকার করতে যাচ্ছিলেন। ঐ সময় দেওয়ান সাহেবের সাথে ছিল দেশি প্রজাতির একটি মাদী কুকুর। জঙ্গলে শিকার করা অবস্থায় দেশি কুকুরটি হারিয়ে যায়। কিছু দিন পর কুকুর টি গর্ভাবস্থায় দেওয়ান সাহেবের বাড়ি ফিরে আসে। কিছু দিন পর কুকুর টি কয়েকটি বাচ্চা প্রসব করে। বাচ্চা গুলো ধীরে ধীরে বড় হওয়ার পর এদের আচারণ সাধারণ কুকুরের চেয়ে অনেক ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। আচারণে ক্ষিপ্রতা ও শারীরিক গঠনে বেশ কিছু নূতনত্ব দেখা যায়। পরে ধারণা করা হয়েছিল জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়ার পর মাদী দেশি কুকুরটির সাথে বাঘের মতভেদে শিয়ালের সাথে মিলন হয়ে এই প্রজাতির কুকুরের উৎপত্তি হয়। তখন দেওয়ান সাহেব কুকুর গুলোকে বিশেষ নজরদারিতে রাখতেন। তখন থেকেই সরাইলের কুকুর দেশে বিদেশে পরিচিতি লাভ করে এবং অনেক স্থানে এই কুকুর ছড়িয়ে পরে।
বর্তমানে সঠিকভাবে সংরক্ষণ এবং নজরদারির অভাবে বিলুপ্তির পর্যায়ে । এক সময় সরাইলের বিভিন্ন বাড়িতে শৌখিন মানুষরা এই কুকুর পালন করতেন। কিন্তু আজ তা অতীত ইতিহাস হয়ে গেছে। গ্রে-হাউন্ড কুকুরের উৎপত্তি যে সরাইলে এখন শুধু ১ অথবা ২ টি পরিবারে এই প্রজাতির কুকুর পালন করতে দেখা মিলবে। সরাইল উপজেলার নোয়াগাও গ্রামের তপন রবিদাসের বাড়ি গেলে এই কুকুর দেখতে পাবেন। তপন রবিদাস ই এই কুকুরের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। তার বাড়িতে ছোট বড় মিলিয়ে ১৫ টি কুকুর রয়েছে। কুকুগুলো সাধারণত বেধে রাখা হয়। অপরিচিত কাউকে দেখলেই উচ্চ সুরে ঘেউ ঘেউ শুরু করে। তাছাড়া কুকুর গুলো অনেক মূল্যবান হওয়ায় হারিয়ে বা চুরি হওয়ার ভয় থাকে বলে বেধে রাখা হয়।
এই কুকুর পালন করা অনেক ব্যয়বহুল এবং নেই কোন প্রশাসনের তদারকি এই কারণে বর্তমানে বিলীনের পথে ঐতিহ্যবাহী এই গ্রে-হাউন্ড কুকুর। এই সব কুকুর সঠিকভাবে গড়ে তুলতে অনেক ভালো ভালো খাবার প্রয়োজন হয়। খাবার হিসেবে দুধ, মাছ, মাংস সহ হরেক রকমের উন্নত মানের খাবার খায়। তাছাড়া এই কুকুরের দামও অনেক বেশি। একটি বাচ্চা কুকুর ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা এবং বড় কুকুর গুলো আকার, রং এবং লিঙ্গভেদে ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে।
সরাইলের এই কুকুর বর্তমানে অস্তিত্ব বিলীনের পথে। অতিরিক্ত দামের কারণে খুব নিরাপদে রাখতে হয়। চোর, ডাকাত অনেক সময় হানা দেয়। এই বিষয়ে সরকারের কাছে সাহায্য কামনা করছে তপন রবিদাস সহ অনেকেই। যেহেতু সরাইল কে সারা পৃথিবী চিনে এই কুকুর দিয়ে তাই এই ঐতিহ্য ধরে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে জানা গেছে যে সরকারিভাবে এই প্রজাতির কুকুর ধরে রখার জন্যে একটি প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপজেলা এবং ইউনিয়ন গুলো দেখে নিন
প্রিয় ৫নং চর গ্রাম, নয়ানগর ইউনিয়ন নয়ানগর, মেলান্দহ, জামালপুর গ্রামের অবস্থানঃ আমাদের এই গ্রামটি ময়মনসিংহ বিভাগের…
কাঞ্চন নগর গ্রাম কাঞ্চন নগর ইউনিয়ন-Kanchanagar Village Kanchanagar Union ৭ংন কাঞ্চন নগর ইউনিয়ন আমাদের কাঞ্চন…
বৌদ্য ডাংগী গ্রাম চর বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন - Bouddo Dangi Village Char Bishnapur Union আমাদের গ্রামে…
রিকাবী গ্রাম আলীহাট ইউনিয়ন দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলার ৩নং আলীহাট ইউনিয়নে অবস্থিত এই "রিকাবী" নামক…
নকলা উপজেলার অন্তর্ভুক্ত গ্রাম সমূহ-Nokola Upozala নকলা উপজেলার অন্তর্ভুক্ত গ্রাম সমূহ চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের অন্তরভুক্ত গ্রাম…
নালিতাবাড়ী উপজেলার অন্তর্ভুক্ত গ্রামসমূহ-Nalitabari upozela কলসপাড় ইউনিয়নের অন্তরভুক্ত গ্রাম সমূহ পশ্চিম কলসপাড় পূর্ব কলসপাড় গাগলাজানী…