ব্রাহ্মণবাড়িয়া ভাষার আঞ্চলিক শব্দার্থ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ভাষার আঞ্চলিক শব্দার্থ

  • হৈয়া (বি.) : ছােট মাছ বা পনামাছ ধরার যন্ত্র । দেখতে পেলুনের মতাে কিন্তু আকারে একটু ছােট। জালের বুনন খুবই ছােট। হৈয়ার মৈদ্দে পনার বাইশ। 
  • নাওয়ানি (ক্রি.) : গােসল করানাে। তার পুতের আইজ নাওয়ানি অইব। নাওয়া+আনি প্র.=নাওয়ানি। নাওয়া অর্থ গােসল করা। শব্দটি বাঞ্ছারামপুর অঞ্চলে বেশি প্রচলিত। 
  • বুরপারানি (ক্রি.) : গােসল করানাে। তার হাত দিনের মাতাত বুরপারানি। বুড়বুর । বুর’ অর্থ ডুব 
  • বুরানি (ক্রি.) : ডুবানি । পুশকুনিত এত ডুবানি বালা না । বুড়বুর>বুর+আ। প্রত্যয়>বুরা+আনি প্র.= বুরানি। 
  • পাছলা (বি.) : কলাগাছের ছাল বা ডগা। পাছলা দিয়া লারটান দে।
  • লারটানা বা কাছিটানা (ক্রি.) : মােটা লম্বা দড়ি বা পাছলা দিয়ে মাছধরার জন্য টান দেওয়া। কলার পাছলা দিয়া লারটানা যা। 
  • উছা (বি.) মাছ ধরার যন্ত্র । বাশের তৈরি । সম্মুখভাগ ছড়ানাে, পেছানে চান্দালি দেওয়া থাকে। উছা দিয়া উছাত থেইক্যা যাতা দিয়া মাচ দর । উছ+আ প্রত্যয়>উছা। উছ অর্থ উপর (বিণ.)। উঁচু> উচ>উছ>উছা।। 
  • পিরা (বি) : ঘরের দরজার সামনে সিঁড়ি। মাডির পিরা বাইঙ্গা যা। নাসিরনগর ও সরাইলে শব্দটি প্রচলিত। জেলার অন্য অঞ্চলে পিরাকে ‘পৈড়া’ বলা হয় । 
  • বৈনারি (বি.) : বান্ধবী। বৈনারি হগলতের পিয়। বােন>বইন>বৈন+আরি প্র.>বৈনারি। শব্দটি নাসিরনগরে প্রচলিত। 
  • কলুই (বি.) : ধান বা মাটি বহনের বড় পাত্র। ওড়া থেকে একটু বড় পাত্র।নাসিরনগর অঞ্চলে শব্দটি প্রচলিত।
  • কুমবালা (বিণ.) : কোন সময়ে। কোমবালা তাইনে আইব। কোন>কুম, বেলা>বালা।। 
  • বদা (বি.) : ডিম। বদা আইন্না বিরান কর। শব্দটি বাঞ্ছারামপুরে প্রচলিত। জেলার অন্যান্য অঞ্চলে বৈদা বলে। কোনাে কোনাে অঞ্চলে আণ্ডাও বলে । বয়ধ আরবি উচ্চারণে, বয়য>বৈদা>বদা। 
  • কুছতা (বিণ.) : কিছু। 
  • জাফ (বি.) : ঘরের পার্টিশন। জাফ দিলে ঘরের আউলে থাহন যা।জাফযাফহইয়াফ (আরবি)।
  • গুরাগারা (বি.) : ছােট বাচ্ছা। গুরাগারাডি হেত নষ্ট করতাছে। ‘গুরা’ অর্থ ছােট। শব্দটি বাঞ্ছারামপুরের প্রচলিত। 
  • গুরাগারা (বি.) : ছােট পাতা, ও ছােট ডাল মেশানাে। গুরাগারা দিয়া পাক কইরা লা।
  • নান্দা (ক্রি.) : রান্না। ছালুন নান্দা অইছে। শব্দটি বাঞ্ছারামপুর অঞ্চলে প্রচলিত। 
  • ছান (বি.) : পাক করা তরকারি। ছান দিয়া বাত হা। সালুন শব্দটি সারা জেলাতেই প্রচলিত। 
  • ছুইটকা (বি.) : ছােট বাচ্চা। ছুইটকার জালানে বইতাম পারি না। এ শব্দটিও বাঞ্ছারামপুর অঞ্চলে প্রচলিত। ছােট>ছুইট>ছুইটকা।
  • ঐচছে (বি.) : ওদিকে । হে ঐচছে গেছে কাজে। শব্দটি বাঞ্ছারামপুরে প্রচলিত। 
  • কাঞ্জি (বিণ.) : বাসি । কাঞ্জি চাইলের পিডা হাইতে মজা। বাঞ্ছারামপুর অঞ্চলে।কাঞ্জি জাউ ও কাঞ্জি পিঠা প্রায় ঘরেই এক সময় তৈরি হতাে এবং এখনাে হয়।
  • আপপাইয়া (ক্রি.) : বুক নিচের দিক দিয়ে সামনে হাত চালিয়ে চলা। আপাইয়া উফরে উইট্টা আ। আপানি (বি.)। কোমর বাঁকিয়ে সামনে হাত বুলিয়ে মাটির নাগাল পাওয়া পরিমাণ পানি। হাত+পানি=হাতপানি>আপ্পানি>আপপাইয়া।।
  • কাববাইয়া (ক্রি,) : জলে হাত দিয়ে বাওয়া। পানিত কাবাইতাছস কেন? ‘কাপ অর্থ ভাত নাড়িবার হাতা। ফার্সি কচহ্ন থেকে কাপ’ শব্দটি এসেছে। কাপ।বেয়ে>বাওয়া>বাইয়া। 
  • আন্দেশা (বি.) : পােয়াপিঠা বা মালপােয়া। আইনুদারে আন্দেশা পিডা বা লাগে। আন্ধা>আন্দা>আন্দে। আন্ধা’ অর্থ অন্ধকার বা আঁধার। এ পিঠা লােকচক্ষন অন্তরালে তৈরি করা হয়। জনশ্রুতি কেউ পিঠা তৈরি করতে দেখলে তা চা থাকে অথবা ফুলে উঠে না। ফার্সি ‘আন্দেশহ’ থেকে আন্দেশা এর অর্থ চোখের আচ্ছন্নতা। 
  • থউয়া>থুওয়া (অব্য.) : ঘূণাসূচক শব্দ। থউয়া! অমন কাজ করছস । আরবি তওব। :>তওবা>থােওবা>থুউয়া। 
  • লুনানি (ক্রি.) : ওলটানাে। পােলাপাইনের হেত লুনানি দেকলে মনত কষ্ট | পাই। লুণ্ঠন>লুনডন>নড়ানি। 
  • হালুতুডে (বি. বিণ.) : একলা, নির্জন। তারে হালুকুডে পাইয়া পিডাইছে। খালি>খালু> হালু। কুড়ে অর্থ একা । [একা+উটিয়া প্র.] । 
  • ছিকর (বি.) : পােড়ামাটির খণ্ড, যা পােয়াতিরা খায়। পেডইললা বেডি আইতে ছিকর হা। 
  • আকাকতা (বি.) : ধাধা। একটা আকাকতা কই। আতকা অর্থাৎ হঠাৎ, অতর্কিত>অতর্কা। কথা>কতা।
  • নিশিভাঙ্গুনি (ক্রি.) : রাতে পার ভাঙন। নিশি অর্থ রাত। রাইতে নিশিভাঙ্গুনির বয়ে গুমাই না। বাঞ্ছারামপুর এলাকায় মেঘনা নদী সংলগ্ন গ্রামের মানুষদের বাড়ির তলদেশ, রাতে জলের তােড়ে ভেঙে পড়ে। একে নিশিভাঙ্গুনি বলে । 
  • আন্দুশি (বি.) : গরুর চোখে লাগানাে নারিকেলের আচড়া দিয়ে তৈরি ঠুলি ! গরুর চুহে আন্দুশি দিলে দেহে না। ফার্সি ‘আন্দেশ’ থেকে আন্দুশ বা আন্দুশি শব্দটি এসেছে। 
  • যুগুতি (বি.) : যােগ্যতাকে বােঝায়। অবজ্ঞা করে এ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। বেডির। যুগুতি আছে। যােগ্যতা>যুগুতি। এরূপ বহু লােকশব্দ সমগ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় লােকসমাজে ব্যবহৃত হয়। 
  • আগা (বি.) : মল। 
  • লাজুন্তি (বিণ.) : লজ্জাশীল।
  • হুটনাটনি (ক্রি.) : তর্কাতর্কি ।
  • বারাবানা (ক্রি.) : ধানভানা ।
  • নাইল্লা (বি.) : পাটগাছ। 
  • দুনদার চাইল (বি.) : কাউনের চাল। 
  • হিং মাছ (বি.) : শিং মাছ। 
  • হৈল মাছ (বি.) : শােলমাছ ।
  • পুৎ (বি.) : পুত্র ।
  • বেনরাইত (বি.) : ভােররাত ।
  • বেকছিনাল (বি.) : যে বুঝে না কিন্তু বােঝার ভান করে । 
  • মাদাইন্নবেলা (বি.):বিকালবেলা। 
  • হাইনবালা (বি.) : সন্ধ্যাবেলা।
  • নিশিরাইত (বি.) : মধ্যরাত। 
  • তলবিছনা (বি.) : তােষক। 
  • বিছুইন (বি.) : পাখা।। 
  • বাইগন (বি.) : বেগুন। 
  • শেওরা বা শওরা (বি.) : ঝােল । ফার্সি শােররা>শওরা। 
  • আড়ানাইজ্জা (বি.) : অষ্টপদ দিয়ে রান্না তরকারি।
  • ডুপিপিডা (বি.) : ভাপাপিঠা।
  • ছৈ (বি.) : সীম। 
  • তরতরা (বি.) : মাছের ঝােল ।
  • টেহামানকি (বি.) : থানকুনি।
  • ব্যারেশগুরু (বি.) : ষাঁড়গরু । কসবার পশ্চিমাঞ্চলে গরুকে ‘গুরু’ উচ্চারণ করে। 
  • ডেহাগুরু (বি.) : বাছুর ।
  • রাতা (বি.) : মােরগ। 
  • নরিমুরগি (বি.) : ডিম পাড়ার পূর্বে নতুন মুরগি 
  • ছাও (বি.) ছানা। 
  • আশ (বি.) : হাঁস। 
  • পাহাল (বি.) : চুলা। 
  • রেউন (বি.) : রসুন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে লেউন বলে।
  • কার (বি.) : ঘরের শিলিং। 
  • চুকা (বিণ.) : টক।
  • হুলা (বি.) : পাটকাঠি। 
  • হতম (বি.) : মিলাদ। আরবি খতম অর্থ সমাপ্তি, মরণ।
  • গইলা (ব.) : তিল। 
  • হবনাটুকি (বিণ.) : আজগুবি নাটুকেপনা। ঝুড়িতে করে রঙিন সুতাে বিক্রির সময়ে বিভিন্ন অভিনয় করা। গাইন বেডি হুতা বেছতে কত হবনাটুকি করে। ‘হব’ অর্থ-না বলা কথা, গুজব। নাটক> নাটুকে> নাটুকি । 
  • ডুলমানি (বি.) : কাপড়ের থলে যার মুখ সুতাে দিনে খােলা ও বন্ধ করা যায়। ডুলমানি ডুলা অইয়া গেছে।
  • পায়ছা বা পৈছরা (বি.) : মাথায় কাপড়ের গােলাকার বিড়া। গাইন বেডির মাতাত পায়ছা দেহা যা। 
  • গেছু (বি.) : কচু জাতীয় নিকৃষ্ট তরকারি, বর্ষাকালে গুটি গুটি শালুকের ন্যায় নিচু জমিতে জন্মে. ঘেঁচু>গেচু>গেছু.
  • উদ্ৰাবেহি (বি.) : হাবা ভুতুম মানুষ। বিয়ে বাড়ির অন্দরে হেঁড়া কাপড় পরে,মুখে চুনকালি লাগিয়ে উদরাবেহি সাজে। দুলাবাই, টেহা দিলে উদরাবেহি পত্ ছারবে। উদার>উদারা>উদ্ৰা,উদার-অর্থ সরল প্রকৃতি। বেহি-অর্থ বােকা। 
  • বেমা (বি.) : মরা প্রাণীর ভেতরে খড় ঢুকিয়ে মূর্তি বানানাে। হেতের মইদ্দে বেমা যুলাইয়া দিছে।
  • ব্যামা (ক্রি.) : চিৎকার করা। এত ব্যামাছ কে? ব্যা দীর্ঘ ‘এ’ উচ্চারণ হয়। ভ্যা (নামধাতু)>ভ্যাম্+আ.প্রত্যয়>ব্যামা।
  • কপকপি (ক্রি. বিণ.) : হৈচৈ। অত ককপি করিছ না। কপ-মুখেরধ্বনি। কতৃক ধ্বনাত্মক ধ্বনি কপকপ+ই.প্র.=ককপি।
  • মাইদ্দে (বি.) : মধ্যে। তা ঘরের মাইদ্দে আছে। মধ্যে >মাইদে>মাইদ্দে । 
  • মাইদ্দে-মাইদ্দে (ক্রি. বিণ.) : মাঝে মাঝে। তাইনে মাইদ্দে মাইদ্দে বাইত আয়ে।
  • বুথুম বা বুতুংগা (বি.) : মাছ ধরার যন্ত্র। বুথুমের গুকে মাচ আইছে। বুথুম বেত বা বাঁশের তৈরি। দেখতে কলসির মতাে। যন্ত্রের ভেতরে শলাকাগুলাে আড়াআড়িভাবে থাকে। আশুগঞ্জ ও সরাইলে একে বলে বুতুংগা। 
  • গাছেলামি (বি.) : বিয়েতে জামাই ঘাটে পৌঁছে যে অর্থ প্রদান করে গাছেলামি ছারা জামাই বাইত আইতে পারে না। ঘাট>ঘাট+আ.প্র>ঘাটা। সালাম> সেলাম>ছেলামি । 
  • গু (বি.) : বুথুমে বা আন্তায় যেখানে মাছ আটকায়। গুকে মাচ ডুকছে। 
  • বিউর বা বেওর (বি.) : মাছ ধরার যন্ত্র। আন্তার চেয়ে বড়। বিউরটা লইয়া আ মাচ দরাম। 
  • গুছলেঙটি (বি.) : লুঙ্গি হাঁটুর ওপরে গুটিয়ে পরা। গুছলেঙটি দিয়া হেতে কাজ কর। গাের্চ অর্থ গুছি । গুচ্ছ> গােছা> গােছ> গুছ। লিঙ্গপট্ট>লেঙ্গটি>ল্যাংটা>লেংটি। 
  • চৈর বা চইর (বি) : নৌকার লগি।
  • চৈর দে (ক্রি.) লগি দিয়ে নৌকা বাওয়া। চৈর দে নইলে নওকা চলত না। 
  • আপদ্দা (বিণ.) : মর্যাদাহীন, অপদার্থ। তর মতঅ আপদ্দা লুক দিয়া কা=আপদ>আপা । আ (নাই)+ পদ> পদ্দ+আ প্র – {স.আ+ পদ্+কিপ; আরবি আফাতুন } 
  • লুঙ্গা (বি.) : চারপাশে মােড়া বা টিলা মাঝখানে নিচু জমি। বাহ্মণবাড়িয়ার ।এলাকায় শব্দটি প্রচলিত। উচ্চারণে কেউ কেউ নুঙ্গা বলে থাকে। লঙ্গা হেতে ১৯ জমছে। 
  • টুইট্টা বা ঠোডা (বি.) : প্রান্ত ভাগ। টিলা বা মােড়ার কোনাে অংশ কোনাে দিকে বেড়ে যাওয়া। এই টুইট্টাডা উত্তরদিকে বাইরা গেছে। টিলার কোনাে অংশে ৮৯ মতাে একদিকে বেড়ে থাকে। তখন তিন পাশে নিচু জমি থাকে।ঠোট>ঠোডা>টুইটা।। 
  • পিছদর (বি.) : পেছনের দরজা। পিছদরে মেহুন্নি গুমায়। পেছন>পিছ, দ্বার।(দরজা)-দার>দর। 
  • মেহুন্নি বা মেহুর বা বিলাই (বি.) : বিড়াল। মেহুন্নি দুদ হাইতাছে। মেকুড় >মেহুর>মেহুন্নি। 
  • উতলা (বিণ.) : কাদা-জলে মেশানাে নরম অবস্থা। উতলার মধ্যে পাও ডাইব্বা যা । (উথলা, উথলানাে ক্রিয়াপদ হতে)। 
  • বেজুন (বি.) : রান্না করা তরকারি। বেজুন দিয়া বাত হাও। নাসিরনগর উপজেলায় শব্দটি প্রচলিত।ব্যঞ্জন>বেজুন। ব্যঞ্জন অর্থ রান্না করা তরকারি। 
  • পাআলি (ক্রি.) : নানারকম প্যাচাল করা। তাইর পাআলি শুরু অইছে। ফার্সি পেচ> পাচ+আলি প্র.>প্যাচালি>পাআলি। 
  • আইল্লা (বি.) : জ্বলন্ত কয়লা বা ছাইভর্তি পাতিল। আইল্লাডা দে শইলডা গর কইরা লই। 
  • আইল্লা (বি.) : গরু বা মহিষের বড় ভুড়ির নিচে গােলকার একটি ছােট ভুড়ি।আইল্লারে হাতপল্লা কয়। সাত> হাত, পল্লা অর্থ ভঁজ বা অংশ। এ ছােট | ভুড়িটিতে ৭টি পর্দা থাকে। আশুগঞ্জ অঞ্চলে আইল্লা বলে। কসবা-আখাউড়া অঞ্চলে তা-ই হাতপল্লা 
  • আইডা (বি.) : উচ্ছিষ্ট খাবার। রাইতে বাইরে আইডা ফালান বালা না।
  • আইট্টা (বিণ.) : শক্ত করে। দড়ি আইট্টা বান দে।
  • আইডা (বি.) : মাছ ধরার যন্ত্র। আইডা দিয়া মাচ দরাম । আন্তা থেকে আকারে আইডা একটু বড়। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ভাষার আঞ্চলিক শব্দার্থ

  • হউরা (বি.) : সরিষা। 
  • চলন (ক্রি.) : বরযাত্রা।
  • আগুর বা আগুন (বি.) : অগ্রহায়ণ । 
  • আবুইদ্দা (বি.) : শিশুবাচ্চা।
  • আউজগর (বি.) : প্রসূতিঘর। কেউ কেউ ছডিগর বলে থাকে।
  • আল্লাচাইল (বি.) : আতপচাল।
  • হিজনা চাইল (বি.) : সিদ্ধচাল। 
  • চং (বি.) : লাঙলের ফাল।
  • খেরেরকুঞ্জি (বি.):খড়ের কুঞ্জ। 
  • সুনাতুলা (বি.) : আদর, যত্ন।
  • বিজরমা (বিণ.) : বেজন্মা।
  • লাউয়াড়ফি (বি.) : একটু বড় আকারের ডুফি। 
  • দইকল (বি.) : দোয়েল।
  • জিনিপুক (বি.) : জোনাকি।
  • যমকুলি (বি.) : পেচা। 
  • চানচরা (বি.) : চড়ই। 
  • হাইলকা (বি.) : শালিক । (ক) বাতহাইলহা (খ) গুহাইলহা। 
  • আইনা (বি.) : বারান্দা। 
  • ওলতি (বি.) : ঘরের চালের পানি যেখানে পড়ে। 
  • দাইর (বি.) : ঘরের ভিটা। ধার>দার>দাইর ।
  • অইঅ (অব.) : হা।
  • চৌহাট্টা (বি.) : দরজার ফ্রেম, চৌহাটি।
  • দারা বা তবক (বি.) : দুই চালের মধ্যভাগের সরু কাঠ।
  • ফেচারচাল (বি.) : ঘরের ত্রিকোণ বিশিষ্ট চাল।
  • চান্দালি (বি.) : সেঁউতির পেছনের কাঠ।
  • চানপাড় (বি.) : চৌচালা ঘরের দুই পাশে ফেচ্চারচালের উপর তিন কোণবিশিষ্ট অংশ। চন্দ্র>চন্দ>চাদ>চান। 
  • দুরাকাউয়া (বি.) : দাঁড়কাক।
  • কুয়াকাবরি (ক্রি.) : কান্নাকাটি। কুয়া’ অর্থ ক্রন্দন, কাবরি-চিৎকার।
  • দামরিডেহা (বি.) : মাদী বাছুর।
  • হের (বি.) : খড়।
  • টাশকি (বিণ.) : নিঃস্তব্ধ। 
  • নজিরা (বি.) : দৃষ্টান্ত। নজর>নজির>নজিরা। নজর অর্থ খেয়াল । 
  • ছেলুই (বি.) : কাঠবিড়ালি।
  • হিল (বিণ.) : পতিত। 
  • মুহা (বি.) : বােতলের ছিপি। মুখ>মুখ+আ প্র.>মুখা>মুহা। 
  • আউইল্লা-বাউইল্লা (বি.) ভবঘুরে । আরবি ওলি> আউলিয়া> আউল> আউইল্লা । বাউল> বাউইল্লা।
  • চুপা করা (ক্রি.) :তর্ক করা।
  • লাইজজার (বিণ.) :অনেক।
  • গুয়া বা পুটকি (বি.) :গুহ্যদ্বার। 
  • গুয়া(বি.):সুপারি।স.গুবাক>গুয়া।
  • ছুরা (বি.) : সুপারি কাটার যন্ত্র।
  • নাহা (বি.) : গরুর নাকে মুখে ঘাড়ে লাগানাে দড়ি।
  • নাক>নাক+আ.প্র>নাকা>নাহা।
  • পাতলা (বি.) : চাষিরা রৌদ্র-বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য মাথায় ব্যবহৃত ঢাকনা । 
  • চহম (বি.) : মই।
  • বগাকাছি (বি.) : ধানকাটার কাস্তে ।
  • গপ্পরদা (ক্রি. বিণ.) : তাড়াতাড়ি।
  • হেতলাগানি (ক্রি.) : জমিতে রােপন করা ।
  • লাইল (বি.) : আইল বা আল ।
  • বনগলাং (বি.) : মাঠের বড় নালা । 
  • গলাং (বি.) : নালা । 
  • জান (বি.) : পুকুরের ভেতরে ও বাহিরে জল চলাচলের নালা।
  • চুহল (বি.) : ধানের খােসা।
  • রশিগর (বি.) : প্রধান ঘর ।
  • বারবাড়িরগর বা আলগাগর (বি.) : বৈঠকখানা । 
  • হাইলডা (বি.) : কাঠ বা বাঁশের তৈরি সরু সূচাগ্র দণ্ড। 
  • হুমুকদর (বি.) : সামনের দরােজা। 
  • মাইজজাল (বিণ.) : ঘরের মধ্যভাগ ।
  • কাইতৈয়া (ক্রি. বিণ.) : কাত হয়ে থাকা।
  • চিত্তৈয়া (ক্রি. বিণ.) : বুক উপর দিকে দিয়ে শােয়া।
  • উপুত্তৈয়া (ক্রি. বিণ.) : উপুড় হয়ে থাকা ।
  • হাবার (বি.) : ছােট জঙ্গল।
  • পিচচারা (বি.) : বাড়ির পিছনের ঝোপঝাড় । 
  • কুয়ারা (বিণ.) : বণিতা।
  • যানযুইর (বি.) : চাল ধােয়ার ছিদ্রযুক্ত পাত্র।
  • হুদুইরাকাডা (বি.) : ডাটা বা শাক জাতীয় গাছের কাঁটা।
  • হঐলাে (অব্য.) : হাঁ (অবজ্ঞা করে)।
  • মিরহা (বি.) : মৃগেল মাছ।
  • হিদল বা শিদল (বি.) : শুটকি।
  • বজুরিমাছ (বি.) : ছােট টেঙরা। 
  • হেইপাইল (বি.) : সেদিকে। সে>হে>হেই। পাইল’ অর্থ দিক।
  • হুয়াদ (বিণ.) : স্বাদ, রূপ।
  • তার (বিণ.) : স্বাদ। 
  • মাইকুরু বা মাইকো (বি.) : মাইক্রোবাস। 
  • মাইকুশ (বি.) : উপরে বিছানা নিচে মালামাল রাখার ব্যবস্থা। দেখতে সিন্দুকের মতাে। 
  • নাইত্তা, নাইপ (বি.) : নাপিত।
  • কছে (বি.) : কাছে । শব্দটি বাঞ্ছারামপুরে প্রচলিত। 
  • লুয়াজিমা (বি.) : প্রয়ােজনীয় জিনিসপত্র ।
  • হিনহিনি (অব্য.) : অস্পষ্ট ও অনুচ্চ স্বরে বিরক্তি প্রকাশ। 
  • দাউ (বি.) : একসঙ্গে অনেক গরু বাঁধার একটি দড়ি। 
  • চেরাপিলা (বিণ.) : সামান্য মলিন চেহারা। চেহারা> চেরা ‘হা’ লােপ পেয়েছে। পিঙ্গল>পিংলা>পিলা । পিলা’ অর্থ বিষণ।
  • যুহুনি (বি.) : গরুর ঘাস আনা ও হাঁস-মুরগি ঢাকার জন্য বাঁশের তৈরি খাচা । ঝকা+উনি= ঝাকুনি> যুহুনি। 
  • প্যাং (বি.) : চোখ। 
  • প্যাংগানি (ক্রি. বিণ.) : মৃদুস্বরে কাদা (ব্যাঙ্গার্থে)। 
  • প্যাঙ্গেরপানি (বি.) : চোখ ও নাকের পানি।
  • জুংরা (বি.) : চারাগাছের নিরাপত্তায় বাঁশের বেষ্টনি।
  • হাজ (বি.) : মেঘ। 
  • নাকঠাসা (বি.) : নাকের অগ্রভাগ ভেতরে পরা অলঙ্কার। নাকের ভেতরে ছিদ করে সরু অলঙ্কার ঠেসে দেওয়া হয়। এজন্য তা নাকঠাসা।
  • নাকফুল (বি.) : ফুলযুক্ত অলঙ্কার যা নাকের বামপাশে পরে।
  • নাকতারা (বি.) : তারাযুক্ত অলঙ্কার যা নাকের বামপাশে পরে।
  • নাকডাইল (বি.) : ডালযুক্ত অলঙ্কার, যা নাকের বামপাশে পরে।
  • পাপ্পা বা পাবদা (বি.) : পেঁপে।
  • কইতর (বি.) : কবুতর। 
  • করুচনি (বিণ.) : যার শরীর বাড়ে না। অবজ্ঞা অর্থে ব্যবহৃত হয়।
  • লটকনবালি (বি.) : নাকের অগ্রভাগে নিচে ঝুলে থাকা অলঙ্কার। লট>লকা অর্থ ঝুলা।
  • ডেঙ্গা (বি.) : ডাটা। বাঞ্ছারামপুর এলাকায় ডাঙ্গা বলে।
  • ফাং (বি.) : শাপলার পাতা। নবীনগরে শব্দটি প্রচলিত।
  • বাণকুরালি বা বাওকুরানি (বি.) : ঘূর্ণিবায়ু। বাণ’ অর্থ তীর, যা দ্রুত চলে। কুর’অর্থ ঘূর্ণিপাক। কুর+আলি প্র.>কুরালি। বাও’ অর্থ বায়ু। কুরআনি প্র.> কুরানি। 
  • ভৈ (বি.) : গন্ধ। ফার্সি বু’ থেকে বৈ>ভৈ। 
  • টেলহা (বিণ.) : ঠাণ্ডা। 
  • হান (বি.) : ইট। 
  • হজেরপাতা (বি.) : ধনেপাতা।
  • পাজুন (বি.) : গরু তাড়ানাের লাঠি। সং. প্রাজন>পাজন>পাজুন।
  • ঢেউয়া (বি.) : ভাত নাড়ার কাঠের চামচ। 
  • ডাবুইর (বি.) : নারিকেলের অর্ধেক মালা ও কাঠি দিয়ে তৈরি চামচ বিশেষ। 
  • কাইচ্চাফুল (বি.) : কাশফুল।
  • বায় (বি.) : বাম। চাষি গরুকে হালচাষে বামে যেতে নির্দেশ দেয়।
  • ওছাদ (বি.) : বমি। উৎসাদ> উসাদ> উছাদ।
  • বাইট্টা (বিণ.) : বেঁটে। 
  • আইত্যা-গুইত্যা (বিণ.) : গভীর সম্পর্ক। 
  • অক্করে (বিণ.) : একেবারে। এক্কেবারে তুলনীয় শব্দ। এক+বার+এ=একেবারে।
  • মুনিমানু (বি.) : কাজের লােক।লেহাজ-তরিৎ (বিণ.) : আদব-কায়দা। আরবি লিহায> লেহাজ অর্থ লজ্জাশরম। আরবি তরবিয়ত>তরিয়াত>তরিবৎ। তরিবৎ বা ‘তরিয়াত’ অর্থ-স্বভাব। এ ব্যাপার (বি.) : ব্যবসা। শব্দটি বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় প্রচলিত।
  • ছুনু (বি.) : স্নাে । 
  • চণ্ডা রাজা (বি.) : গালি বিশেষ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার চুন্টা গ্রামে কোনাে রাজা ছিল না। প্রকৃতপক্ষে রাজা নয় এমন লােককে তা বলা হয়। আবার, পুংগা>চুংডা>চুণ্ডা। পুংগা অর্থ জারজ। এভাবে বিবর্তিত হয়। 
  • গয়নারনাও (বি.) : যাত্রীবাহী নৌকো। 
  • সুয়ারিনাও (বি.) : যে নৌকায় আরােহী সওয়ার হয়। ফার্সি : সওয়ার>সােয়ারি>সুয়ারি। 
  • পুংডা বা পুংটা (বিণ.) : অসৎ, দুষ্ট। পুং-পুরুষ বা পুরুষজাতীয়। যে পুরুষ অসৎ সে-ই পুংডা। পুংডি (স্ত্রী)। 
  • হুশিবাসী (বিণ.) : আনন্দিত।
  • হাইচ্চৎ বা হাছালৎ (বি.) : স্বভাব। 
  • মুতাম (ক্রি.) : প্রস্রাব করব ।
  • পিছা (বি.) : ঝাড়। 
  • সুনারদিন/ রূপাররাইত (বিণ.) : সুখের দিন/সুখের রাত। 
  • জব (ক্রি.) : জবাই ।
  • লিআছবালি (বি.) : কানের পাতা ছিদ্র করে যে বালিগুলাে পরে।
  • কানপাশা (বি.) : কানের লতিতে যে অলঙ্কার পরে। একে মাকরিবালিও বলে। 
  • হাইয়ানি-গুতানি (ক্রি.) : কান কথা বলা, কুপরামর্শ। হাই (স্বামী) + আনি প্র.= হাইয়ানি অর্থ বদনামি। গুতা অর্থ ঠেলা। স্বামীর কানে কুকথা ঢুকানাে। 
  • বিজাগাইরা (বিণ.) : নরম ও অলস প্রকৃতির লােক। গাইরা’ অর্থ অলস। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ভাষার আঞ্চলিক শব্দার্থ

  • ফেনারআনা (বি.) : কচুরিপানার দল। 
  • গুয়ারি (বি.) : গরু ঘাস খাওয়ার জন্য বাঁশের বেষ্টনি।
  • গুয়া (বি.) : সুপারি।স.গুবাক>গুয়া। 
  • আড়াচাডা (ক্রি.) : মেলামেশা। হাঁটা>আড়া। হিং চাটনা>চাটন>চাডন> চাড়া।‘চাড়া’ লেহন। 
  • নুন-মইচ (বি.) : লবণ ও মরিচের মিশ্রণ।। 
  • অলঅলি বা বলবলি (অব্য.) : বেশি কথা বলার শব্দ। 
  • বেওয়া (বি.) : চোখের ভ্র। 
  • বাইচ্চাহিচ্ছা (ক্রি.) : বাছবিচার । বাছ>বাইচ্চা। 
  • হিচ্চা (ক্রি.) : সিঞ্চন। সেচন>সেচ।
  • বাইচ্ছা (ক্রি.) : হিসাব করে । গইন্যা>গােনে। বাইচ্ছা>বেছে।
  • এউজু (বি.) : এদিকে। 
  • হেউজু (বি.) : সেদিকে।
  • ক (ক্রি.) : বল। কথা ক (তুচ্ছার্থে)। 
  • ক (ক্রি) : বলেন। কথা কন্। (সম্রমার্থে)। 
  • অতুলি (বিণ.) : এতগুলাে।
  • হারাও (ক্রি.) : দাঁড়াও। 
  • দুরুই (বিণ.) : দূরেই। 
  • দিরং (ক্রি. বিণ.): দেরি। 
  • আহাহা (ক্রি. বিণ.) : তাড়াতাড়ি। 
  • কডা (বিণ.) : লবণাক্ত। 
  • বাই (বিণ.) বাসি।
  • হেরঅ বা উবা (ক্রি.) : দাঁড়াও। তুই হেউজু হেরঅ ।
  • হিজনা (বিণ.) : সেদ্ধ ।
  • ঠামাইলাে (ক্রি.) : গােছাইলাে।
  • জুলা করা (ক্রি.) : পরিবারের অগােচরে সঞ্চয় করা। 
  • জুদা হওয়া (ক্রি.) : আলাদা হওয়া। ফার্সি শব্দ জুদা। 
  • তইচ-তারনা (বিণ.) : অস্থিরতা।
  • ওলাবাদাইম্মা (বি.) : অকর্মণ্য লােক, নিষ্কর্মা।‘ওলা’ অর্থ অকর্মণ্য। সং আকুল>প্রাং আউল। 
  • গাইয়া-গাইয়ি (ক্রি.) : ছুঁচালাে অস্ত্র দিয়ে পাল্টাপাল্টি আঘাত। সং, আঘাত>ঘাত, ঘাতি>গাই+আ প্র. গাইয়া। 
  • হেশ (বি.) : আত্মীয়।
  • ব্যাদাম (বিণ.) : ডাক ছাড়া, ফার্সি বেদম>বেদাম, বেদম অর্থ মারাত্মক।
  • ব্যাদানাইয়া (বিণ.) : বিবেক-বিবেচনাহীন। ব্যাদা অর্থ চেতনাহীন, ফার্সি বেজান থেকে ব্যাদা। 
  • চলন (ক্রি.) : বরযাত্রা। 
  • উগাইর (বি.) : ডােল বা জাবারের মাচা। আগার>উগার>উগাইর ।
  • হুয়ার (বি.) :ঘরের চালের সঙ্গে বাঁধা মাচা।
  • তলে তলে (অব্য.) : চুপে চুপে।
  • কুদুর (বিণ.) : কিছুক্ষণ বা কতটুকু।
  • বান্ডি (বি.) : দিয়াশলাই ।
  • হক্ক (ক্রি.) : সরে যাওয়া ।
  • গপ্পরদা (ক্রি. বিণ.) : তাড়াতাড়ি। 
  • চফদ্দা (ক্রি. বিণ.) : দ্রুত। নবীনগর উপজেলায় প্রচলিত।
  • ছুরুত (বিণ.) : রূপ।
  • ইলা (সর্ব.) : তিনি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে প্রচলিত। 
  • হনলা (সর্ব) : অমুক বা সে জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে প্রচলিত ।
  • হরঅ (ক্রি.) : সর। অনুজ্ঞায় নড়ে বা সরে বসার আদেশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে প্রচলিত। 
  • হরাহ্ (ক্রি.) : সরানাে ।
  • হেবুইজ্জা (ক্রি.) : সরে যাও। ৩৪০. ব্যাণ্ডা (বিণ.) : তীব্র ।
  • গাদলা (বিণ.) : বেশি বৃষ্টি। ৩৪২. হিংগাইল (বি.) : নাকের ময়লা।
  • নিমাইমুখি (বিণ.) : দুষ্টুবুদ্ধি সম্পন্ন মহিলা।
  • হেডাম (বি.) : শক্তি।
  • হার (বি.) : গুড়।
  • নাইরহল (বি.) : নারিকেল ।
  • হালুবালু (ক্রি.বিণ.) : তাড়াহুড়া। 
  • পিরান (বি.) : পাঞ্জাবি।
  • লায়েক (বিণ.) : লম্বা, বড়।
  • তইচ্ছানা (বিণ.) : অস্থির।
  • বেইলা বা বিলা (বি.) : মেয়ে।
  • কট্টা (বি.) : বাটি।
  • থমথইম্যা (বিণ.) : তাজা ।
  • হদর (বি.) : আস্ত মােরগ-মুরগি ও অন্যান্য উপাদান দিয়ে বড় বাসন সাজিয়ে জামাই, জামাই’র বাবা, চাচা, বেহাই ও মুরব্বীদের খাবার।
  • আউলাই-নাস্তা (বি.) : ময়রার দোকানে তৈরি মিষ্টি ও জিলাপি।
  • ড ক (বিণ.) : রূপ। 
  • আংরা-আংরা (বিণ.) : পুড়ে কয়লা হওয়া ।
  • নাচুরি-গাছুরি (বিণ.) : চঞ্চল।
  • ব্যাবাইরা (বি.) : বিবাহের সময় বর কনের নানি, দাদি, চাচি, মামি, খালা ও শিক্ষিকার জন্য আনা উপহারের শাড়ি। ব্যবহৃত>ব্যবহার>ব্যাবাইরা ।
  • হাজুনি-পারুনি (বি.) : সাজ-সজ্জার উপকরণ। 
  • আগুইচ্চা (অসমাপিকা ক্রি.) আগলিয়ে। 
  • লাতুরবুড়া (বি.) :থুরথুরে বৃদ্ধ।
  • হুরাহাবুডি (বি.) : আবর্জনা।‘হুরা’ অর্থ ঝাট দেওয়া। হার্ড>হাবুডি। হাবডা অর্থ বাজে। হাবুডি’ অর্থ কিছুই না, আবর্জনা।
  • হাইছ (বিণ.) : ঘরের পেছন।
  • বারাবাতি (বি.) : বাড়া বা বাড়তি ভাত। বারা>বাড়া।
  • টাট্টি (বি.) : পায়খানা । (হি. টট্টি)।
  • কারি (বি.) : স্থূপ। 
  • কাইক (বি.) : পদক্ষেপ।
  • হুলারকারি (বি.) : পাটকাঠির স্তুপ । 
  • বেন্দা (বি.) : লাঠি। 
  • বেন্দাবাজি (বিণ.) : লাঠিবাজি। 
  • দুবৃরাগাস (বি.) : দুর্বাঘাস।
  • কুডা (বি.) : বড় ধরনের লাঠি।
  • পাকবরশ (বি.) : বৌভাত, পাকস্পর্শ। 
  • পাছলা (বি.) : কলাগাছের বাকলের আঁশ।
  • হুরু বা ছুডু (বিণ.) : ছােট। তাইনের হুরুপুতে বেজাল করে।
  • মাইজম (বিণ.) : মধ্যম। 
  • ছুবরা (বি.) : পূঞ্জীভূত শিকড় বা আঁশ।
  • ছুবাওলা (বিণ.) : আশযুক্ত ।
  • তমতমি (বিণ.) : সুসময় ।
  • টেমটেমি (ক্রি. বিণ.) : দুরবস্থা অতিক্রমকালে অভাবে শরীরের মধ্যে টেমটেমি ভাব
  • কমকছুরি (বিণ.) : কম পরিমাণ । 
  • কৎ (বি.) : খয়ার।
  • কয়ালি (বি.) : যে অতিরিক্ত পান খায় । 
  • তুলাকাফর (বি.) : যে কাপড় যত্ন করে তুলে রাখা হয়। 
  • শাদ (বি.) : সাহায্য। যহন বিফদ আইল বাফে আমারে শাদ দিল । শব্দটি সরাইল উপজেলায় প্রচলিত। 
  • মাইট্টা (বিণ.) : মেটে। 
  • হিতান (বিণ.) : শিয়র। বিছানায় মাথার দিক। হিতানে কুল বালিশ দেও । শিরস্থান>শিথান>হিথান>হিতান।
  • পইতান (বিণ.) : বিছানায় পায়ের দিক। পইতানে কাতা দেও। পায়স্থান>পায়থান>পইতান। 
  • তেরাচান্দি (ক্রি. বিণ.) : এলােপাথারি । তর তেরাচান্দি চলনে বিফত অইব। সং-ত্রিবৃ>তেওড়া>তেঐরা>ত্যারা>তেরা। ‘তেরা’ অর্থ বাঁকা। চান্দি= ব্রহ্মতালু। মাথার উপরিভাগ, মাথা যার তেরা, সে-ই তেরাচান্দি।
  • আদাকাডা (বিণ.) : অর্ধেক কাটা। ‘কাডা’ অর্থ বেতের তৈরী ডালা। 
  • চেরাক (বি.) : বাতি। ফার্সি চেরাগ। 
  • কুফিবাতি (বি.) : টিনের কেরােসিন বাতি। 
  • অক্ত (বিণ.) : সময় । আরবি ওয়াকৃত থেকে অক্ত। অক্ত অর্থ সময়। 
  • টাল (বি.) : স্থূপ। 
  • লুছুইন (বি.) : কোনাে কিছু মুছিবার ও ঘর লেপনের ন্যাকড়া।
  • কাহাইল (বি.) : কোমড় ।
  • অজ (বি.) : হজ।
  • অজি (বি.) : হাজি ।
  • হাউকা (বি.) : সাঁকো ।
  • রঙদুলারি (বি.) : আনন্দ।
  • টেটনামি (বিণ.) : চালাকি। টেটন+আমি. প্র.=টেটনামি। 
  • উগলারচাডি (বি.) : হােগলার-চাটাই । চাটি>চাডি । 
  • কইল্লাল (বি.) : মাটির কলস রাখার উঁচু স্থান।
  • কেরপেট (ক্রি.) : মনােমালিন্য হওয়া।
  • আতাল-যাতাল (ক্রি.) : থেমে থেমে রাগারাগি ।
  • হুয়া (বি.) : শসা।
  • প্যাক (বি.) : কাঁদা।
  • নিমরাবিলাই (বি.) : ভেজা বিড়াল । নিম+রা=নিমরা’ অর্থ ভেজা।
  • চুঙা (বি.) : সরু বাঁশের পাত্র।
  • চিনিরবাসুন (বি.) : চিনামাটির বাসন। 
  • কেল্লা বা কল্লা (বি.) : মাথা। আরবি কূিল অহ> কিল্লাহ>কিল্লা>কেল্লা।
  • পাইল্লারপুষ (বি.) : এক গােত্রের লােক। পাতিল> পাইল্লা।
  • কুটনামি (বিণ.) : বদনামি। কূট অর্থ মিথ্যা।
  • তালি (বি.) : ফাঁকি।
  • নতিজা (বিণ.) : পরিণতি। তর নতিজা হরাপ অইব। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে শব্দটি প্রচলিত।
  • জুতরাকাফর (বি.) : দো-ভজ শাড়ি। অতীতে বয়স্ক নারীরা কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সময় একটি সাদা শাড়ি দু’ভাজ করে গায়ে জড়িতে নিতেন।
  • নাস্তারপাইল্লা (বি.) : নাস্তার পাতিল। বিয়ে, মুসলমানি কিংবা আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে যাওয়ার সময় নতুন পাতিলে করে হাতের তৈরি পিঠা নেওয়া হতাে।এটাকে ‘নাস্তার পাতিল’ বলত।
  • দদিমঙ্গল (বি.) : ছােট ছেলেদের মুসলমানির আগে দই, চিড়া, বাতাস, গুড় সহযােগে যে খাবার দেওয়া হতাে তাকে ‘দধিমঙ্গল’ বলে।
  • পিপুইছালা (বি.) : সীমের বীচির ভাজা, ভাজা চাল, সিদ্ধ মুশুরি সহযােগে যে খাবার তৈরি হয় তা-ই পিপুইচালা। আঞ্চলিক নাম পিপুইছালা । 
  • হৈরহা (বি.) : হালচাষে লাঠির অগ্রভাগে ছােট লােহা। হৈরহা দিয়ে গরু গুতা দে।