বরুলিয়া গ্রাম মেহার উত্তর ইউনিয়ন

৬৮ হাজার অনলাইন গ্রাম: বাংলাদেশের গ্রাম

বরুলিয়া গ্রাম মেহার উত্তর ইউনিয়ন

পরিচিতিঃ আমার গ্রামের নাম বরুলিয়া, শান্তিপূর্ণ বরুলিয়া। গাছের ছায়াঘেরা, পাখির কলকাকলি ও মিষ্টি কলরবে মুখরিত, সোনালি ফসলে পরিপূর্ণ নিরিবিলি শান্তশিষ্ট গ্রাম। যেখানে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে পরম শান্তি ও নিরাপত্তায় বসবাস করে প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, পেশা, জাতের উর্ধে গ্রামের প্রতিটি মানুষের আন্তরিকতা ভালবাসা ও সৌহার্দপূর্ণ আচরনে এককথায় গ্রামটি “আদর্শ গ্রাম” হিসেবে পরিচিত।

অবস্থানঃ আমার গ্রামটি চাঁদপুর জেলার অন্তর্গত শাহরাস্তি উপজেলার উত্তর পূর্বাংশে অবস্থিত। চাঁদপুর-টু-লাকসাম রেললাইন টি পশ্চিম থেকে গ্রামের মধ্যে দিয়ে সোজা পূর্বদিকে চলে গেছে। গ্রামের পশ্চিমে নাওড়া ও ঘুঘুশাল দুইটি গ্রাম, উত্তরে খনেশ্বর, পূর্বে কদমতলী ও শেখকুনি, দক্ষিণে নয়নপুর ও পতিচোঁ গ্রামগুলো অবস্থিত।

প্রসাশনিক তথ্যঃ চাঁদপুর জেলার অন্তর্গত শাহরাস্তি উপজেলার, মেহার উত্তর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে বরুলিয়া গ্রামটি অবস্থিত। একজন ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে গ্রামের প্রসাশনিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয়।

নামকরণঃ গ্রামের নামকরণ সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও বয়োবৃদ্ধ দের ভাষ্যমতে অত্র গ্রামটি হিন্দুস্থান ও পাকিস্তান বিভক্তির কালে ত্রিপুরার অংশ প্রাচীন মহকুমা কুমিল্লা জেলার হাজিগঞ্জ থানার অধীনে থাকাকালীন সময়েও বরুলিয়া নামেই ছিলো। দেশ বিভক্তের সময় অত্র গ্রাম থেকে হিন্দু পরিবার গুলো ভূমি বদল করে ভারতের পূর্ব ত্রিপুরায় চলে যায়। পরবর্তী সময়ে কুমিল্লা বিভক্ত হয়ে চাঁদপুর জেলা ও হাজিগঞ্জ বিভক্ত হয়ে শাহরাস্তি উপজেলা প্রতিষ্ঠা হলে গ্রামটি তার আদিনাম বরুলিয়া হিসেবেই থেকে যায়।

ধর্মীয় বিবরনঃ গ্রামের পাঁচ শতাধিক জনগণের মধ্যে শতকরা ৬০ শতাংশ মুসলিম এবং বাকি ৪০ শতাংশ হিন্দু ধর্মাবলম্বী রয়েছেন। পারস্পরিক সুসম্পর্ক ও সহমর্মিতায় এই গ্রামের মানুষের মধ্যে সর্বদা সুম্পর্ক বিদ্যমান। মুসলিম দের জন্য গ্রামের কেন্দ্রে একটি জামে মসজিদ ও পাশ্ববর্তী অংশে হিন্দুদের উপাসনালয় রয়েছে। ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের বাইরেও সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মকান্ডে গ্রামের সবাই একতাবদ্ধ থাকেন।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ গ্রামের লোকজনের শিক্ষার হার শতকরা ৮০ শতাংশ। ছোট্ট এই গ্রামে সরকারি বা এমপিও ভূক্ত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকলেও শিক্ষার ক্ষেত্রে তেমন কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। বেইস প্রতিষ্ঠিত একটি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ব্র্যাক প্রতিষ্ঠিত একটি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও দুটোই এখন পরিত্যক্ত।

জনজীবনঃ সাধারন অন্যান্য গ্রামের মতোই এই গ্রামের প্রধান আয় আসে কৃষিকাজ হতে। এছাড়া ব্যবসা ও প্রবাসী আয়ও নেহাত কম নয়। গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের সদস্য সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন।

যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ রেললাইন, পাকা ও কাঁচা সড়ক নিয়ে গ্রামের যোগাযোগ ব্যাবস্থা খুবই ভাল। পাশ্ববর্তী শাহরাস্তি রেলস্টেশন ও কাঁকৈরতলা বাস স্টপেজ গ্রামবাসীর চলাচলের প্রধান মাধ্যম। লাকসাম বা চাঁদপুর থেকে সরাসরি ট্রেন যোগে এবং কুমিল্লা ও চাঁদপুর থেকে সরাসরি বাস যোগে আমার গ্রামে যাতায়াত করা যায়।

শেষকথাঃ সবকিছু বিবেচনায় আমার গ্রামটি আমার নিকট একটি সুন্দর, সুশৃঙ্খল, মনোরম, মায়াভরা, ছায়াঘেরা গ্রাম। “বরুলিয়া আদর্শ গ্রাম”