বগা গ্রাম গজালিয়া ইউনিয়ন
ভৌগোলিক অবস্থান ও নামকরণের ইতিহাসঃ
দক্ষিণাঞ্চলের জেলা, সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ির জেলা বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার ধোপাখালী ইউনিয়ন এর ৯ নং ওয়ার্ড এর ছোট্ট একটি গ্রাম “বগা”। প্বার্শবর্তী ভাষা ও বড় আন্ধারমানিকের গ্রামের কিছু অংশও (৪৪ নং মৌজার অন্তর্ভুক্ত অঞ্চলসমূহ) কখনো কখনো “বগা” নামে পরিচিত। এই গ্রামের পশ্চিমে “ভাষা”, পূর্বে ” বড় আন্ধারমানিক এবং দক্ষিণে “শ্যানপুকুরিয়া” গ্রামের অবস্থান। উত্তরে “বাগেরহাট-পিরোজপুর সীমান্ত নির্দেশ করে বয়ে চলেছে বলেশ্বর নদী।নদীর ওপরে “চর রঘুনাথপুর” গ্রামের অবস্থান।
নদীর চরকে কেন্দ্র করে “চর-রঘুনাথপুর” ও “বগা” গ্রামের মধ্যে রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের ইতিহাস রয়েছে। নদীর চরে অসংখ্য বক এর পদচারণায় কোন একসময় মুখরিত ছিল, নাম না জানা এ গ্রামটি। নামকরনের সঠিক কোন ইতিহাস না থাকলেও বক এর আঞ্চলিক নাম বগা থেকেই এই গ্রামের নামকরণ করা হয়েছে বলে ধারনা করে অধিকাংশ মানুষ। গ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা, দুটি মসজিদ ও একটি মাদ্রাসা রয়েছে।
পেশাঃ
বলেশ্বর নদীর কোল ঘেষে গড়ে উঠা ছোট্ট এ গ্রামটির অধিকাংশ মানুষ মৎসজীবি। গভীর সমুদ্রে ট্রলার নিয়ে মাছ ধরার পাশাপাশি কৃষিকাজ ও চিংড়ি ঘের পেশার সাথে এ গ্রামের মানুষ জড়িত।
গ্রামের উল্লেখযোগ্য স্থান ও অবস্থানঃ (পশ্চিম থেকে পূর্বে)
- ১। ধলা স্টোর
- ২।ক্লের মোড়
- ৩।মোল্লাভিটা
- ৪।গাঙ্কুল
- ৫।তালগাছতলা
- ৬।বগা নতুন বাজাড়
গ্রামের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ ও পেশাঃ
১। মরহুম আবেদ আলী ব্যাপারী (সাবেক চেয়ারম্যান-ধোপাখালী ইউনিয়ন পরিষদ)
২। লোকমান মাঝি (মেম্বার-ধোপাখালী ইউনিয়ন পরিষদ)
অন্যান্য তথ্যঃ
গ্রামটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত অবস্থায় থাকায়, অশিক্ষা ও কুশিক্ষায় দীর্ঘদিন আচ্ছন্ন ছিল। স্বাধীনতার পরপর নির্বাচনে “আবেদ আলী ব্যাপারী” নামে একজন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও কার্যত এই গ্রামে প্রভাবশালী কোন রাজনৈতিক বা সামাজীক নেতার আবির্ভাব ঘটেনি। গ্রামটি জনবহুল।
আনুমানিক প্রায় ৪০০০ লোক রয়েছে ৫০ বর্গকিলোমিটারের এই গ্রামটিতে। তরুন ও যুবাদের একটা বড় অংশ সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষাকার্যে নিয়োজিত।নিজস্ব গ্রাম ভিত্তিক একটি সামাজীক সংগঠন “আলোর দিশারী তরুন সংঘ” এর একটা সামাজীক সার্ভের তথ্যমতে নার্সারি হতে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত ৫৫০+ শিক্ষার্থী বর্তমানে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে।
গ্রামটি দীর্ঘদিন ধরে কুশিক্ষায় আচ্ছন্ন থাকায় সবার কাছে অবহেলিত ছিল, সরকারি কিংবা বেসরকারী কোন প্রণোদনা না পাওয়ায় গ্রামটির অর্থনৈতিক অবস্থা দীর্ঘদিন খুবই খারাপ ছিল। বর্তমানে গ্রামের কয়েকজন তরুন এর প্রচেষ্টায় “আলোর দিশারী তরুন সংঘ” নামক প্লাটফরমটি শিক্ষা ও সামাজীক সমস্যাগুলো দূরীকরণের লক্ষ্যে কাজ করছে। সংগঠনটির উদ্দেশ্য হচ্ছে, সামাজীক সমস্যামুক্ত নৈতিক নাগরিক হিসেবে গ্রামের প্রত্যেক লোককে তৈরী করে বাগেরহাট জেলায় “বগা” গ্রামকে একটি মডেল গ্রাম হিসেবে তৈরী করা।
হয়তো সেদিন খুব দূরে নয়, যেদিন এই গ্রামই হবে বাগেরহাট জেলার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।