ঘাটিনা গ্রাম উল্লাপাড়া পৌরসভা

ঘাটিনা গ্রাম উল্লাপাড়া পৌরসভা

ঘাটিনা উল্লাপাড়া উপজেলা তথা সিরাজগঞ্জ জেলার ভিতর একটা পরিচিত নাম। এটি উল্লাপাড়া পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত ৯নং ওয়ার্ডের শেষ সিমানায় বাঙ্গালী নদীর তীর জুরে অবস্থিত অনিন্দ সুন্দর একটি গ্রাম, যার রয়েছে প্রাকৃতিক সমৃদ্ধির সাথে সাথে বর্নাঢ্য ইতিহাস ও ঐতিহ্য।

ঘাটিনা গ্রামের পশ্চিমে রয়েছে বাঙ্গালী নদী (করোতোয়া নামে চেনে অনেকে) এবং চরঘাটিনা গ্রাম, পূর্ব দিকে বয়েচলেছে নদীথেকে বের হওয়া খাল খালের পার ধরেই এগিয়ে চলেছে যোগাযোগের প্রধান রাস্তা স্টেশন থেক কৃষকগঞ্জ বাজার রোড। উত্তর ও খালের পূর্ব দিকে কিছু অংশ জুরে অবস্থান শাজাহানপুর গ্রামের। দক্ষিন পূর্ব দিকে রয়েছে জোলাহাটি কানশোনা ঘোষপাড়া এবং দক্ষিনে গ্রামের বিস্তির্ণ ফসলী মাঠের পরে সোনতলা গ্রাম। দক্ষিন পশ্চিম কর্নারে নদীর কুল ঘেষে আমাদের গ্রামের চরে গড়ে উঠেছে নতুন পাড়া নামে নতুন গ্রাম যারা তাঁত শিল্পের জন্য বিখ্যাত। [গুগল ম্যাপে আমাদের গ্রাম]

ঘাটিনা গ্রাম অনেক পুরাতন একটি গ্রাম প্রায় ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাষনামলের আগে থেকেই এই গ্রামের অস্তিত্ব রয়েছে। নামকরনের সঠিক কোন ইতিহাস জানাযায়নি যদিও তবে ঘাটিনা গ্রাম তার স্বর্ণসন্তানদের দ্বারা ঠিক ই তার নাম সারাদেশে মাথা উচু করে তুলে ধরেছে। ঘাটিনাতে রয়েছে বিখ্যাত শতবর্ষী রেল ব্রিজ ঘাটিনা রেলওয়ে সেতু যা উপনিবেশিক শাষনামলে নির্মান করা এক অনবদ্য সুন্দর স্থাপত্ত্যকলা। আর এই ঘাটিনা ব্রিজের কোলেই সিরাজগঞ্জের সূর্যসন্তানেরা ১৯৭১ সালে প্রথম প্রতিরোধ গরে তোলে পাক-হানাদারদের বিরুদ্ধে। রেলব্রিজের পাশেই বাঙ্গালী নদীর বুকচিড়ে নির্মান হয়েছে ঘাটিনা সেতু যা ঘাটিনা গ্রাম কে উল্লাপাড়া সদরের সাথে সংযুক্ত করেছে ওপর দিকে পাশাপাশি সাধারন সেতু ও রেল সেতু মিলে দর্শনিয় একটি স্থানের তৈরি করেছে, এখানেই ধারন করা হয়েছে বিখ্যাত চলচিত্র চন্দ্রগ্রহনের বেশ কিছু অংশ।

ঘটিনা গ্রাম এক শান্তি ও নিরাপদ ঠিকানা হয়ে আছে এগ্রামের প্রায় ৩ হাজার লোকের। এখানে হিন্দু ও মুসলিম মিলে সহাবস্থানে বসবাস করে আসছে বছরের পর বছর। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ ই কৃষি নির্ভর এবং সবাই পারস্পারিক সম্পর্কে একে অপরের আত্মীয়প্রায়। আশেপাশের গ্রামের তুলনায় এটি শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে বেশ উন্নত। গ্রামে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮২ং ঘাটিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং গ্রামের প্রায়ত বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব আলহাজ আজিজল হক প্রামানিকের প্রতিষ্ঠা করা ঘাটিনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। এছাড়াও গ্রামের দক্ষিন পূর্ব পাশে প্রাইমারি বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঝে খেলার মাঠ। সর্বদক্ষিনে রয়েছে ঘাটিনা পৌরকবরস্থান। গ্রামের পশ্চিম দিকে হিন্দু বসতি রয়েছে যা ঘাটিনা পালপারা রোড দ্বারা প্রায় পুরো গ্রামের সাথে সংযুক্ত। মৃত্তিকা শিল্পের ওপর টিকে আছে তাদের জীবিকা। এছাড়া ধর্মীয় শিক্ষায় ও বেশ উন্নত ঘাটিনা। গ্রামে রয়েছে তিনটি মসজীদ তারমধ্যে ঘাটিনা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদঘাটিনা পালপাড়া জামে মসজীদ অন্যতম। কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজের পাশাপাশি নিয়মিত কুরআন শিক্ষা দেয়া হয়। 

বাংলাদেশের অন্যান্য গ্রামের মতই কৃষ্টি, কালচার, মমতা, মায়ার চাদরে ঘেড়া অনন্য অসাধারন একটি গ্রাম ঘাটিনা, যা তার সম্পদ ও মাতৃত্বের বন্ধনে আমাদের আপন করে রেখেছে আজন্ম।