গোসাইস্থল গ্রাম গোপিনাথপুর ইউনিয়ন

গোসাইস্থল গ্রাম গোপিনাথপুর ইউনিয়ন

গোসাইস্থল গ্রাম গোপিনাথপুর ইউনিয়ন

আমাদের “গোসাইস্থল”
কসবা উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ড এর ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেরে বয়ে গেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আমাদের ছোট্ট গ্রাম টি।আয়তনে ছোট হলেও বৃটিশ আমল থেকেই স্বয়ং-সম্পুর্ন মৌজা নিয়ে গঠিত আমাদের প্রিয় জন্মস্থান।উপজেলার সাথে রয়েছে আমাদের গ্রামের সুন্দর যোগাযোগ ব্যবস্থা।ভারত থেকে বয়ে আসা ছিনাই নদী,গ্রামের মেটোপথ,প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মনমোগ্ধকর আমাদের ছোট্ট গ্রামটি।


মুক্তিযুদ্ধে আমাদের এলাকাটি ছিলো ২ নং সেক্টরে। গ্রামের দক্ষিন পশ্চিমে লক্ষিপুর গ্রামের পশ্চিম দিকে ছিল পাকিস্তানিদের বাঙ্কার।১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর আমাদের প্বার্শবর্তী গ্রাম লতুয়ামুড়া এবং চকচন্দ্রপুরে পাকবাহিনীদের সাথে শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ।মুক্তিবাহিনী সাহস আর গংগাসাগর, উজানিস্বার মুক্তিযুদ্ধাদের সহায়তায় আমাদের বাড়াই, চন্ডিদ্বা, গোসাইস্থল, গানপুর, জগান্নাথপুর লুতয়ামুড়া কিছুটা পাকমুক্ত হয়। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধিনের পর শুরু হয় গ্রামের গ্রামের নতুন অধ্যায়।


ওহ! আমিতো গ্রামের নামকরনের কথাটাই বলতে ভুলে গেলাম।
গ্রামের প্রবীন লোক হিসাবে আমার দাদা মরহুম যদু মিয়া র মুখে শুনেছিলাম প্রায় ৯০০ বছর পুর্বে অাজকের সিলেট অঞ্চল তৎকালে বিতালং রাজ্যভুক্ত ছিলো। শ্রী সনাতন ছিলেন ওই ‘বিতালং’ রাজ্যের রাজকুমার। অাধ্যাত্বিকতার টানে রাজ্য ছাড়েন রাজকুমার সনাতন। বহু এলাকা ঘুরে শেষতক তিনদিকে বিলে ঘেরা গোসাইস্থল টিলার উপর বটগাছের তলায় অাসন পাতেন সনাতন।

টিলা ভূমিটির পূর্বদিকে বিলের ওপারে হিন্দু সম্প্রদায়ের সমৃদ্ধ একটি গ্রামের নাম গোসাইস্হল, যার পাশেই অবস্থিত ঐতিহ্যবাহি পদ্মবিল।পরবর্তীতে সাধক সনাতন গোস্বামী প্রয়াত হলে এখানেই তাঁকে সমাহিত করা হয়। সোনাতন গোসাই নামের ছিলেন। তার নামের গোসাই থেকেই গোসাইস্থল নামের উৎপত্তি।সেখানেই গড়ে ওঠে গোসাইস্থল মন্দির, এবং গোসাইস্থল বাজার(আশ্রমের বাজার)।
আমাদের গ্রামটি আয়তনে ছোট হলেও সুজলা সফলা শষ্য শ্যমলা গ্রাম বাংলার প্রকৃতির প্রতিরূপ যেনো আমাদের গ্রাম টি।

FB IMG 1601956405276 6dc759f9

গ্রামের আরেকটি ঐতিহ্য হচ্ছে গোসাইস্থল পদ্মবিল :চারদিকে ছোট বড় পাহাড় বেষ্টিত একটি বিল। দক্ষিনে ছিনাই নদী। দেখলে মনে
হয় পাহাড় বিলটিকে কোলে নিয়ে বসে আছে।
বৈশাখের ধান কাটার পর বন্যার পানি আর দক্ষিনা বাতাসের শো শো
গন্ধে বিভোর , শ্রাবনের অঝোর ধারায়
জলে টইটুম্বুর।❤পদ্মফুল❤, শাপলা,শালুক, সিংরা দিয়ে ভরপুর এই বিলটি।
ধরা,বন্যায় পানির উপর টুপরী ঘরে বসে
হিমেল বাতাসে শরীর মন জুরিয়ে যায়।


আমাদের গ্রামটিতে রয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি কেন্দ্রিয় মসজিদ,একটি ফুরকানিয়া মাদ্রাসা, এবং এাটি পাঞ্জেগনা মসজিদ। চিত্তবিনোদনের জন্য রয়েছে ৩০ একর জায়গায় নির্মিত জোবেদা পার্ক। আছে এতিহ্যবাহি গোসাইসাইস্থল বাজার। যেখানে আশেপাশের ১০ গ্রামের মানুষ একসময় বাজার করতে। বৃটিশ আমলের ক্যাম্প। যা বর্তমানে গোসাইসাইস্থল বি.জি.বি কোং সদরে পরিনিত হয়ছে। আছে গোসাইস্থল মন্দির,কসবা থানার ঐতিহ্যবাহি পহেলা বৈসাখের সবচেয়ে বড় মেলা আমাদের গোসাইস্থল গ্রামেই হয়।

মাত্র দুই হাজার জনসংখ্যা নিয়ে গঠিত আমাদের গ্রামে শিক্ষার হার নেহায়েত কম নয়। ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার,শিক্ষক, ব্যবসায়ী নিয়েই আমাদের গ্রাম পরিপুর্নতা পেয়েছে। আমাদের আছে ঘোলাভরা ধান, ঘোয়ালভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ।সব মিলিয়ে সত্যিই আমাদের গ্রামটি মনমুগ্ধকর।