আমাদী গ্রাম ও ইউনিয়ন

৬৮ হাজার অনলাইন গ্রাম: বাংলাদেশের গ্রাম

আমাদী গ্রাম ও ইউনিয়ন

আমাদের গ্রামের নাম আমাদী।কয়রা উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডই আমাদী নামে পরিচিত।মাইকেল মধুসূদন দত্তের বিখ্যাত ” কপোতাক্ষ নদে”র তীরে এর অবস্থান।ধারণা করা হয় এই নদে প্রচুর পরিমাণে “আমাদী” নামক মাছ পাওয়া যেত বলে এই এলাকার নাম কালের বিবর্তণে আমাদী হয়ে গেছে।এক্ষেত্র অনেকেই বলে থাকেন প্রাচীন বারো ভূঁইয়াদের একজন রাজা প্রতাপাদিত্য কয়রা এলাকাতে আধিপাত্য বিস্তার করেন।একসময় এই জঙ্গলাকীর্ণ এলাকাতে তিনি আবাদ শুরু করেন তারই পরিপ্রেক্ষিতে “আবাদ”থেকে “আমাদী” নামের উৎপত্তি।

আবার অনেকের মতে আরব আমিরাত থেকে আসা একদল সুফি,সাধক,পীরেরা এখানে নানা ধরনের স্থাপাত্য তৈরী করেন এবং বসবাস করেন।তাদের খেদমতের জন্য অনেকে এখানে আবাদ গড়ে তোলেন যার থেকে ” আমাদী” নামের উৎপত্তি।তবে এক্ষেত্র অনেকেই দ্বিমত পোষণ করতে পারেন।আমাদী গ্রামের উত্তরে মসজিদকুড় গ্রাম,দক্ষিণ পশ্চিমে জায়গীর মহল,পূর্বে বালিয়াডাঙ্গা গ্রাম অবস্থিত।এর উত্তরে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ” কপোতাক্ষ ” এবং দক্ষিণে” কয়রা ” নদী প্রবাহিত।আমাদী গ্রামে দুটি মসজিদ রয়েছে।

একটি আমাদী বাজার কেন্দ্রিক অন্যটি “পীর বোরহান উদ্দীন মাজার ” সংলগ্ন।এখানে কয়েশ বছরের পুরানো পরিমলা কালী মন্দির রয়েছে।এ মন্দিরে কষ্টি পাথরের কালী মূর্তি প্রতিষ্ঠিত। একটি দূর্গা মন্দির,গোবিন্দ মন্দির,বাসন্তী মন্দির রয়েছে।প্রাচীন কাল থেকে এখানে সবধরনের জাতি গোষ্ঠীর বসবাস।ঈদ,পূজা,পহেলা বৈশাখের মত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শত শত বছর ধরে উদযাপিত হয়ে আসছে।একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়,মাদ্রাসা,মন্দির ভিত্তিক শিক্ষাকেন্দ্র,মাধ্যমিক স্কুল,কলেজ( অনার্স পর্যন্ত) পলিটেকনিক কলেজের মত উন্নত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখানে আছে।

কয়রা উপজেলা হাসপাতালটি এখানেই অবস্থিত আছে পোস্ট অফিসের ডিজিটাল সেবা,নৃত্য,সংগীত শিক্ষা কেন্দ্র।আছে দুটি বড় বাজার, একটি হাট।যেখানে প্রতি মঙ্গলবার ও শুক্রবারে হাট বসে থাকে।আর হ্যাঁ,এখানে আছে ঐতিহাসিক দিঘী,খানকাহ,পীর বোরহান উদ্দীনের কাছারী বাড়ী,দশগজের পুকুর আর তেরো আউলিয়ার বাঁধ।সবমিলিয়ে আমার গ্রাম অনেক সমৃদ্ধ একটি এলাকার নাম।এটি আমাদের কাছে ভূ-স্বর্গের চেয়ে কোন অংশে কম নয়।