ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার জন্ম তরুণপ্রজন্মের কিছু প্রিয় মুখ
জাকিয়া বারী মম
জাকিয়া বারী মম একজন বাংলাদেশী অভিনেত্রী এবং মডেল। তিনি ১৪ আগস্ট ১৯৮৫ সালে ঢাকায় জন্ম গ্রহন করেন। তার আদিনিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া। তার বাবার নাম মজিবুল বারী এবং মায়ের নাম আয়েশা আক্তার । তার শৈশব কাটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় । ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনে নাচ শিখেন কবিরুল ইসলাম রতনের কাছে। প্রথম টেলিভিশনে আবির্ভূত হন ১৯৯৫ সালে। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের নতুন কুড়ি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে এবং পুরস্কার লাভ করেন। এরপর ২০০৬ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার সৌন্দর্য্য প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করেন।তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হতে নাট্য ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে ২০১০ সালে স্নাতক এবং ২০১২ সালে স্নাতকোত্তর পাশ করেন।
২০০৭ সালে তৌকির আহমেদ পরিচালিত দারুচিনি দ্বীপ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে তার আবির্ভাব ঘটে। এই চলচ্চিত্রের তার কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া ২০১৫ সালে ছুঁয়ে দিলে মন ছবিতে অভিনয় করে মেরিলপ্রথম আলো পুরস্কারের দর্শক জরি ও সমালোচক শাখায় শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন। বর্তমানে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি টেলিভিশন নাটকেও কাজ করেছেন
সাজু খাদেম
সাজু খাদেম বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। তিনি ২২ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলায় জন্মগ্রহন করেন। তার বাবা নাম মোবারক আলী খাদেম এবং মায়ের নাম তহুরুণ নেসা খাদেম। বিবাহিত জীবনে তার স্ত্রীর নাম পৈত্রি হক। তিনি মাধ্যমিক পাশ করেন ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরি হাই স্কুল। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন সিলেট এমসি কলেজ থেকে। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শেষ করেন।
১৯৯৭ সালে মঞ্চনাটকের মাধ্যমে সাজু খাদেম তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। পরে ১৯৯৯ সালে, তিনি ইটিভিতে নীরব কমেডি ধারাবাহিক ভোলার ডায়েরিতে অভিনয় করেন। তারপর, তিনি “রাতে বিরাতে” নামে একটি জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্রটি হল কমন জেন্ডার । চলচ্চিত্রটিতে তিনি এক হিজড়ার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। তিনি কবিরাজ গোলাপ শাহ, অলসপুর, পৌষ ফাগুনের পালা, চোর কাব্য এবং গ্রন্থিকগণ কহে, অম্লান বিশ্বাসের পঞ্চম, শিহাব শাহীনের মোম্বাসা ছাড়াও তিনি অভিনয় করেছেন ইতি দুলাভাই ফেসবুক সহ আরো বহু নাটকে
জিয়াউল রোশান
জিয়াউল রোশান জন্মস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলায়। তিনি একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা ও মডেল যিনি বাংলাদেশী এবং ভারতীয় বাংলা ছায়াছবিতে উভয় স্থানে অভিনয় করেন। রোশন মডেলিং এর মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০১৬ সালে রক্ত চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রজীবন শুরু করেন। তার সিনেমার মধ্যে রক্ত, ধ্যাততেরিকি, ককপিট উল্লেখ্যযোগ্য। বর্তমানে মিশন সুন্দরবন সিনেমাতে তার শুটিং চলমান রয়েছেন।
ইরেশ যাকের
ইরেশ যাকের বাংলাদেশের একজন চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং টিভি অভিনয়শিল্পী। তার আদিনিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া। বাবার নাম আলী যাকের এবং মায়ের নাম সারা যাকের দুজনই অভিনয়শিল্পী। ইরেস ১৯৭৬ সালের ৬ নভেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন। ইরেসের শৈশব বাংলাদেশেই কাটে। তিনি স্কুলজীবন শেষ করেন ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুলে। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকাতে পাড়ি দেন। সেখানে তিনি গ্রিনেল কলেজে ভর্তি হন। অতঃপর সেই দেশেই অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং অভিনয়ে মনোনিবেশ করেন
তিনি অভিনেতা হিসেবে টেলিভিশনে বেশিরভাগ কাজ করেছেন, এছাড়া তিনি বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রেও অভিনয় করেছেন। ছুঁয়ে দিলে মন চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ খলচরিত্রে অভিনেতা বিভাগে তিনি ২০১৫ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
সাবরিনা পড়শি
সাবরিনা পড়শি একসাথে কন্ঠশিল্পী, মডেল এবং অভিনেত্রী।
পড়শি ৩০ জুলাই ১৯৯৬ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর পৌরসভার মৌলভী পাড়ায়। তার বাবা প্রকৌশলী এহসান-উর-রশিদ এবং মা জুলিয়া হাসান গৃহিনী। ছোট বেলা থেকে নাচের প্রতি আগ্রহী হয়ে নাচ শেখেন পড়শী। পরবর্তীতে ক্লাসিক্যাল সংগীত শেখা শুরু করেন। ২০০৭ সালে সরকারি ভাবে আয়োজিত কমল কুড়ি নামক সংগীত প্রতিযোগিতায় দেশের গান বিভাগে বিজয়ী হন তিনি। ২০০৮ সালে চ্যানেল আইয়ের “ক্ষুদে গানরাজ” নামক গানের প্রতিযোগিতায় ২য় রানার আপ হন তিনি। ২০০৯ সালে তিনি তার একক অ্যালবাম “পড়শী” এর কাজ শুরু করেন। তিনি ৫ সঙ্গীত পরিচালক সঙ্গে অ্যালবাম তৈরির কাজ করেন। প্রথম অ্যালবাম পর তিনি ২০১১ থেকে প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম “পড়শী ২” মুক্তি পায়। ২০১২ সালে পড়শী “বর্ণমালা” নামে একটি ব্যান্ড দল গঠন করেন ২০১৩ সালের ঈদুল ফিতরে তার তৃতীয় একক অ্যালবাম “পড়শী ৩” মুক্তি পায়। এই অ্যালবামের “জনম জনম”, ‘হৃদয় আমার’, ‘লাভ স্টেশন” শীরোনামের গানগুলি বেশ জনপ্রিয়তা পায়। ছাড়াও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ইমরান এবং চিত্রনায়ক সাকিব খানের সাথে মডেলিং ও অভিনয় করতে দেখা যায়।
আঁখি আলমগীর
আঁখি আলমগীর হলেন একজন বাংলাদেশী গায়িকা, অভিনেত্রী ও উপস্থাপিকা। তিনি ১৯৭৪ সালের ৭ই জানুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আলমগীর একজন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী অভিনেতা এবং মাতা খোশনূর আলমগীর একজন গীতিকার। আখি আলমগীরের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায়। আঁখি ১৯৮৪ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালিত ভাত দে চলচ্চিত্রে কিশোরী জরি চরিত্রে অভিনয় করেন। এতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ শিশু লিল্পী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। তাছাড়াও এই পর্যন্ত তার ১৯টি গানের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৯৭ সালে তার প্রথম গানের অ্যালবাম প্রথম কলি প্রকাশিত হয়। পরের বছর তার সাড়া জাগানো বিষের কাঁটা অ্যালবামটিও প্রকাশিত হয়। এই অ্যালবামের “বন্ধু আমার রসিয়া” ও “পিরীতি বিষের কাঁটা” গান দুটি শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
সুজানা জাফর
সুজানা জাফর বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী। তিনি ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৮৬ সালে ঢাকা জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায়। বাবার নাম আবু জাফর মায়ের নাম আনোয়ারা বেগম। ২০০১ সালে সুজানা জাফর মডেল হিসেবে মিডিয়া জগতে যাত্রা শুরু করেছিলেন। ২০০৩ সালে তিনি লাক্স ফটোসুন্দরী খেতাব জিতেন।
তিনি ছয় পর্বের নাটক লাইম অফ লাইফ এ বিখ্যাত গায়ক শাফিন আহমেদের সাথে অভিনয় করেছিলেন।এছাড়াও তিনি বেশ কিছু টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন।
তিনি তাহসানের গাওয়া ও ইমরানের সুর করা কেউ না জানুক গানে মডেল হিসেবে অভিনয় করে আলোচিত হন। এছাড়াও তিনি তুমি আসবা নাকি ও আমি ছুঁয়ে দিলে শিরোনামের দুইটি গানের মিউজিক ভিডিওতে মডেল হিসেবে অভিনয় করেছেন
আরেফিন রুমি
আরেফিন রুমি বাংলাদেশের জনপ্রিয় একজন কণ্ঠশিল্পী এবং সুরকার। আরেফিন রুমি ১৯৮৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর টাকার মোহাম্মদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে তিনি কলেজে পড়াকালীন সময় একাধিক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলেন। ছোটবেলায় তিনি় তার মায়ের কাছ থেকে গান শিখেন। হাবিব ওয়াহিদ ও ফুয়াদ আল মুক্তাদির ছিল প্রেরণার উৎস। গানের জগতে আসার আগেই ২০০৬ সালে মডেলিং শুরু করেন রুমি। তিনি হাবিব ওয়াহিদ এবং ফুয়াদ আল মুক্তাদিরের কাছে অডিও ইনজিনিয়ারিং শেখেন
তার ৩০ টিরও বেশি অ্যালবাম, একক এবং মিশ্র কাজ মুক্তি পেয়েছে। তিনি বাংলাদেশে জনপ্রিয় শিল্পীদের মধ্যে একজন। ২০১১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত তার অনেকগুলো জনপ্রিয় বাংলা গান প্রকাশিত হয়েছে।
মোহাম্মদ আশরাফুল
মোহাম্মদ আশরাফুল বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের সাবেক ব্যাটসম্যান এবং অধিনায়ক। তিনি ৭ জুলাই ১৯৮৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরি করার রেকর্ডের অধিকারী। তিনি এই কৃতিত্ব অর্জন করেন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কারই মাটিতে। ব্যাটিংয়ে দক্ষতা ছাড়াও তিনি মাঝে মাঝে ডানহাতে লেগ স্পিন বল করে থাকেন। অল্প সময়ে আশরাফুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
২০১৩ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএলে) ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠার পর আশরাফুল এই বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেন এবং জাতির কাছে ক্ষমা চান। পরে আশরাফুলকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
সোলায়মান সুখন
পুরো নাম খন্দকার মোহাম্মদ সোলায়মান। তবে তিনি সোলায়মান সুখন নামেই বেশি পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের জীবনসংগ্রামের গল্প শোনান নতুনদের। অনুপ্রেরণা জোগান দেন। বিভিন্ন মঞ্চে কথা বলেন দেশের সমসাময়িক বিষয় নিয়েও।
১৯৮০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি যশোর সেনানিবাসে জন্ম সুখনের। বাবা আবদুল ওয়াদুদ সাবেক সেনা সদস্য আর মা সামসুন নাহার খন্দকার ছিলেন স্কুল শিক্ষিকা। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ঈদের সময় জনপ্রতি আলাদা জামা-কাপড় কেনা হতো না তাঁদের। কারোর নামে জামা, কারোর নামে প্যান্ট, কারোর নামে জুতো। তারপর মিলিয়ে-মিশিয়ে পরা হতো।
তার প্রথম শ্রেণির বাংলা বই পুরোটা আরেকটা বই দেখে লিখে ও এঁকে দিয়েছিলেন মা। বাবার চাকরির সুবাদে বেশ কয়েকটা স্কুলে পড়েছেন সুখন। শেষে ১৯৯৫ সালে এসএসসি পাস করেন। ২০০০ সালে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি থেকে কমিশনপ্রাপ্ত হন। এরপর চাকরি ছেড়ে বন্ধুর পরামর্শে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে। ২০০৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।